সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বর্তমানে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার যুগে সরকারি পরিষেবা অনেক সহজ হয়েছে। কিন্তু এরই সুযোগ নিচ্ছে সাইবার অপরাধীরা। সম্প্রতি ‘ই-চালান’ বা ট্রাফিক জরিমানার নামে সাধারণ মানুষকে ঠকানোর এক নয়া জাল বিছিয়েছে প্রতারকরা। একটু অসাবধান হলেই আপনার কষ্টার্জিত টাকা নিমেষেই গায়েব হয়ে যেতে পারে।
কীভাবে কাজ করছে এই চক্র?
প্রতারকরা প্রথমে একটি সাধারণ মোবাইল নম্বর থেকে আপনাকে মেসেজ পাঠাবে। এই মেসেজগুলো এমনভাবে সাজানো হয়, যেন মনে হবে সেগুলো এসবিআই বা কোনও সরকারি দফতর থেকে এসেছে। মেসেজে লেখা থাকে যে আপনার গাড়ির নামে একটি বড় অঙ্কের চালান কাটা হয়েছে। মানুষের মনে ভয় ধরানোর জন্য ২৪ ঘণ্টার একটি ডেডলাইন বা সময়সীমা তৈরি করা থাকে। বলা হয়, নির্দিষ্ট সময়ে টাকা না দিলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ভুয়ো ওয়েবসাইটের ফাঁদ
মেসেজের সঙ্গে দেওয়া থাকে একটি লিঙ্ক। লিঙ্কে ক্লিক করলেই আপনি একটি ওয়েবসাইটে পৌঁছাবেন। সাইবার সিকিউরিটি সংস্থা 'সাইবল'-এর মতে, হুবহু সরকারি পোর্টালের মতো দেখতে অন্তত ৩৬টি ভুয়ো ওয়েবসাইট এখন ইন্টারনেটে ঘুরছে। এই সাইটগুলোর লোগো, রং এবং ডিজাইন আসল ই-চালান পোর্টালের মতো। আপনি সেখানে গাড়ির নম্বর দিলে একটি ভুয়ো চালানের তথ্যও দেখতে পাবেন।
টাকা চুরির কৌশল
পেমেন্ট করার সময় সেখানে শুধু ক্রেডিট কার্ড বা ডেবিট কার্ডের অপশন থাকে। আপনি যখনই কার্ডের ডিটেইলস এবং ওটিপি (OTP) দেবেন, আপনার কার্ডের সমস্ত তথ্য হ্যাকারের হাতে পৌঁছে যাবে। এতে কেবল চালানের টাকা নয়, আপনার পুরো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খালি হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
কীভাবে সাবধান হবেন
১. অচেনা নম্বর থেকে আসা কোনও লিঙ্কে ক্লিক করবেন না।
২. চালান চেক করতে সবসময় সরকারি ওয়েবসাইট echallan.parivahan.gov.in ব্যবহার করুন।
৩. মেসেজটি আসল কিনা তা যাচাই করতে ‘এম-পরিবহন’ (mParivahan) অ্যাপের সাহায্য নিন।
৪. কোনও সাইটে শুধু কার্ড পেমেন্ট চাইলে সতর্ক হোন।
৫. সন্দেহজনক মেসেজ বা লিঙ্ক পেলে দ্রুত সাইবার ক্রাইম পোর্টালে (1930) রিপোর্ট করুন।
মনে রাখবেন, সচেতনতাই আপনার সুরক্ষার প্রধান অস্ত্র। কোনও তাড়াহুড়ো না করে তথ্য যাচাই করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
