shono
Advertisement

ট্রেন দুর্ঘটনায় টুইট, সাক্ষীদের বেলায় চুপ! এই লুকোচুরি কি আপনাকে মানায় বিরাট?

এত গা বাঁচানো মনোভাব নিয়ে কি আইডল হওয়া যায় বিরাট?
Posted: 05:20 PM Jun 03, 2023Updated: 05:09 PM Jun 08, 2023

অরিঞ্জয় বোস: বিরাট কোহলি, বালেশ্বরের মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে শোকপ্রকাশ করে টুইট করেছেন আপনি। এই দুর্ঘটনায় যে আপনি মর্মাহত এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু বিগত তিন মাস ধরে কুস্তিগিরদের নিরলস আন্দোলন নিয়ে একটি শব্দও তো খরচ করেননি। একটা টুইট করে পাশে দাঁড়ানো যেত না? এত গা বাঁচানো মনোভাব নিয়ে কি আইডল হওয়া যায় বিরাট? শত শত তরুণ তো আপনাকেই তাঁদের প্রেরণার আসনে বসায়। এই প্রেরণার উদাহরণই কি রাখছেন আপনি?

Advertisement

আমরা কিন্তু অন্য বিরাটকে চিনতাম। যে বিরাট শামিকে কেউ হেনস্তা করলে পালটা জবাব দিতে পিছু পা হয়নি। আমরা কিন্তু সেই বিরাট কেই চিনতাম, যে বিরাট অনুষ্কাকে নিয়ে ট্রোলের ধারালো উত্তর দিতেন তাঁর চোখা কভার ড্রাইভের মতোই। আপামর ভারতবাসী কিন্তু সেই বিরাটকেই ভালবাসে, যিনি মাঠের বাউন্সার যেমন মাথা উঁচু করে সামলান, মাঠের বাইরের সুইংও তাঁকে পরাস্ত করতে পারেনি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ যে কোহলিকে দেখছি, সে যেন বিরাট ২.০।

[আরও পড়ুন: ‘করমণ্ডল নয়, মৃত্যুমণ্ডল’, ওড়িশা ট্রেন দুর্ঘটনায় রেলমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি অভিষেকের]

হ্যাঁ, ব্যক্তিগত জীবনে আপনার বদল এসেছে ঠিকই। সেই কলার তোলা কোহলি এখন অনেকটাই নমনীয়। যিনি ব্যাড-প্যাচ কাটাতে স্ত্রীর সঙ্গে ধর্মস্থানে পর্যন্ত যান। তাতে অফ-ফর্ম কাটে বটে, কিন্তু ধর্মরক্ষা করা কি হয়? আমাদের ধর্ম তো বলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে। অন্ধকার নয় আলোর অনুগামী হতে। অসৎ থেকে সততার পথে হাঁটতে। ন্যায়ের এই মূল শিক্ষা থেকেই যদি সরে যায় কেউ, তাহলে কি আর ধর্মস্থানে যাওয়া আলাদা কোনও গুরুত্ব বহন করে? বিরাট কোহলি, আপনি নিশ্চই ভুলে যাননি, যে দেশের জন্য আপনি খেলেন, সেই দেশের জন্যই খেলেন সাক্ষী মালিক, ভিনেশ ফোগাটরা। ব্যক্তিগত কীর্তির শিখরে আপনি দাঁড়িয়ে থাকতেই পারেন, তবে আপনার খেলাটা কিন্তু দলগত। সেখানে সাক্ষীদের লড়তে হয় একক ভাবে। একার জোরেই তাঁরা দেশের পতাকাকে বিশ্বের দরবারে উড়িয়ে দেন। আপনার কৃতিত্বে যদি অন্যদের অবদান থেকেও থাকে, ওঁদের কিন্তু তা নেই।

যে পদক তাঁরা গঙ্গায় ভাসাতে চলেছিলেন, তা তাঁদের একান্তই নিজস্ব অর্জন। আপনারই পূর্বতন কীর্তি আজাদ তো বলেইছেন, যেমন তাঁরা ‘৮৩ বিশ্বকাপ ইন্দিরা গান্ধীর জন্য জেতেননি, তেমনই সাক্ষীরাও মোদির জন্য পদক জেতেনি। তাঁরা জিতেছেন দেশের জন্য। আপনিও সেই দেশের জন্যই খেলেন। অথচ আপনার দেশেরই সহ-ক্রীড়াবিদরা যখন যৌন হেনস্তার মতো একটি গুরুতর অভিযোগের প্রতিবাদ জানিয়ে রাস্তায় নেমেছেন, এমনকী পুলিশি হেনস্তার শিকার পর্যন্ত হয়েছেন, তখন কি একটি কথাও বলতে পারতেন না?

যে বিরাট কোহলি এখন নিজেই কন্যাসন্তানের পিতা, সেই বিরাট নারী নিগ্রহের অভিযোগে এতখানি নিশ্চুপ কেন? বিশ্বাস করুন, এই নির্লিপ্ত বিরাটকে বোধ হয় আমরা চাই না। যে অসংখ্য তরুণ আপনাকে সামনে রেখে জীবনের পথখানা গড়ে নেবে বলে ভাবে তাদের আগামীর পথে অস্বস্তিকর কাঁকড় হয়েই থেকে যাবে।

[আরও পড়ুন: করমণ্ডল এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনার পরই চর্চায় রেলের ‘কবচ’, কী এই দুর্ঘটনা প্রতিরোধী প্রযুক্তি?]

মৃত্যুশোক নিশ্চিতই গভীর। তাই সে দাবি করে নীরবতা। অন্যদিকে, পাশের মানুষ বিপদে পড়লে তাঁর জন্য সরব হওয়াই মানবতা। আপনার নীরবতায় মানবতাকেই কি খাটো করলেন না? একটু ভেবে দেখবেন প্লিজ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement