ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: কালীসায়র থেকে উপাসনা মন্দির পর্যন্ত রাস্তা নিয়ে রাজ্য-বিশ্বভারতী টানাপোড়েন অব্যাহত। রাস্তা ফেরত নেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আরজি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। আনন্দ পাঠশালা ও পাঠভবনের পড়ুয়াদের নিরাপত্তা ও বিশ্বভারতীর (Visva Bharati University) ঐতিহ্যপূর্ণ ভবনের সুরক্ষার স্বার্থে ওই রাস্তা ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
শনিবার মুখ্যমন্ত্রীকে (CM Mamata Banerjee) চিঠি দিয়েছেন বিশ্বভারতীয় উপাচার্য। চিঠির বয়ান অনুযায়ী, ২০১২ সালের জুন মাসে রাজ্যকে একটি চিঠি দিয়েছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সেই চিঠিতে কারণগুলি উল্লেখ করে কালীসায়র থেকে উপাসনা মন্দির পর্যন্ত রাস্তার অধিকার চেয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে ২০১৭ সালে রাস্তাটি বিশ্ববিদ্যালয়কে হস্তান্তর করে রাজ্য। তারপরই ওই রাস্তায় ভারী গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। আগামী দিনে তাঁদের রাস্তার উন্নয়ন ও নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়নের পরিকল্পনা আছে বলেও চিঠিতে জানিয়েছেন উপাচার্য।
[আরও পড়ুন : বিশ্ববিদ্যালয়কে গৈরিকীকরণের চেষ্টা উপাচার্যের! বাম ছাত্র সংগঠনের বিক্ষোভে উত্তপ্ত বিশ্বভারতী]
বোলপুরবাসীর অভিযোগ, ভারী গাড়ির পাশাপাশি ওই রাস্তায় হাঁটাচলা করা ও বাইক চলাচলও বন্ধ করতে চাইছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তাই রাস্তায় ব্যারিকেড করে পাঁচিল তুলছে তাঁরা। এই অভিযোগ অস্বীকার করে উপাচার্য চিঠিতে লিখেছেন, আনন্দ পাঠশালা ও পাঠভবনের পড়ুয়াদের নিরাপত্তার কথা ভেবে শুধুমাত্র ভারী গাড়ি চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বাইক, সাইকেল ও হাঁটাচলার উপর কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া-সহ একাধিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন এই রাস্তা দিয়ে ভারী গাড়ি চলাচলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ঐতিহ্যপূর্ণ ভবন ও স্থাপত্যগুলির। তাই মুখ্যমন্ত্রীকে রাস্তা ফেরত নেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন জানালেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য।
প্রসঙ্গত, বোলপুরের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, বিশ্বভারতীকে পিডব্লুডি-র রাস্তার একটি অংশ দেওয়া হয়েছিল, তা আবার ফিরিয়ে নেবে রাজ্য সরকার। কারণ, ওই রাস্তায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ সাধারণের যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছিল। তাতে অসুবিধায় পড়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের আবেদন মেনে মুখ্যমন্ত্রী রাস্তাটি ফের পূর্ত দপ্তরকেই ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেই ঘোষণা অনুযায়ী নতুন বছরের প্রথম দিনই কালীসায়র থেকে উপাসনা মন্দির পর্যন্ত রাস্তার দখল নেয় বীরভূম (Birbhum) জেলা প্রশাসন।