দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: ভোটার তালিকায় 'ভূতুড়ে কাণ্ডে' নবান্নের কড়া হুঁশিয়ারির পর 'অ্যাকশন মোডে' দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। ভোটার তালিকা নিয়ে বাড়ি বাড়ি নতুন করে স্কুটিনি শুরু করেছেন চম্পাহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মিতালি গাইন মণ্ডল। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় বারুইপুরের চম্পাহাটি বিধানসভার তালিকায় ১৮ হাজার ২০০ জন ভোটারের নাম ছিল। আচমকাই তা বেড়ে হয়েছে ২২ হাজার ৪০০ জন। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।

এদিন চম্পাহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের পিয়ালি ৪১ নম্বর বুথ ও চম্পাহাটি ২৬ নম্বর বুথের তালিকা নিয়ে রাস্তায় নেমেছে প্রশাসন। যাঁদের নাম তালিকায় যুক্ত হয়েছে তাঁদের অধিকাংশই এলাকার বাসিন্দা নয় বলে জানান স্থানীয়রাই। অধিকাংশের বাড়ি মালদহ, মুর্শিদাবাদ, শিলিগুড়িতে। কীভাবে অন্য জেলার বাসিন্দাদের নাম তালিকায় উঠল তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
বিরোধীদের দাবি, তৃণমূলের অঙ্গুলিহেলনে এই ঘটনা ঘটেছে। পালটা তৃণমূলের দাবি, নির্বাচন কমিশন বিজেপি নিয়ন্ত্রিত। তাই তারাই তালিকায় ভূতুড়ে ভোটার ঢুকিয়েছে। ঘটনায় খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ তুলে বলেন, "আমার কাছে খবর রয়েছে, স্থানীয়রা বলার পরও বহু এলাকায় বিএলওরা ভোটার তালিকায় মৃত ব্যক্তির নাম রেখে দিয়েছেন। অনেকে বহুদিন এলাকা থেকে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। তাঁদেরও নাম রেখে দেওয়া হয়েছে।” সতর্ক করেছিলেন প্রশাসনিক কর্তাদেরও। মমতার দাবি যে শুধুমাত্র অভিযোগ ছিল না তা, চম্পাহাটির ঘটনায় স্পষ্ট হয়ে যায়।
এরপরই শনিবার ভোটার তালিকায় ভুয়ো বা 'ভূতুড়ে' ব্যাপার ঠেকাতে জেলা প্রশাসনকে কড়া নির্দেশ দেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। এরপরই চম্পাহাটি পঞ্চায়েতের ২৬ নম্বর বুথের সদস্য উপপ্রধান মিতালি বাড়ি, বাড়ি গিয়ে ভূতুড়ে ভোটারদের নাম খোঁজার চেষ্টা করছেন। ৪১ নম্বর বুথে গত লোকসভা ভোটে ভোটার সংখ্যা ছিল ১০৫৩ জন। এবার তা অস্বাভাবিক বেড়ে গিয়ে ১৩৫৭ হয়েছে। পাশাপাশি ২৬ নম্বর বুথে ও একই ঘটনা ঘটেছে।
চম্পাহাটি বিজেপির জেলা অফিসের সম্পাদক শ্যামল মজুমদার বলেন, "যারা শাসকদল তাদের হাতেই সবকিছু। তারাই এইভাবে ভোট সংখ্যা বাড়িয়েছে। বিজেপির উপরে দোষ চাপিয়ে নিজেদের দোষ থাকার চেষ্টা করছে।" তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ আগেই জানিয়েছিলেন, "আসল কারসাজি বিজেপির। ফিজিক্যাল ভেরিফিকেশন বন্ধ করে, ইসিকে সেটিং করে কেন্দ্রীয় এজেন্সি একটা নতুন মডিউলে বহিরাগতদের নাম তুলছে।"