সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২৩০ মিটার লম্বা ঐতিহাসিক ব্রিজ ভেঙে মৃত্যু হয়েছে ১৪১ জনের। অথচ তার মেরামত হয়েছিল গত সাত মাস ধরে। তাহলে কী দুর্নীতি? আসন্ন গুজরাট বিধানসভা ভোটের (Gujarat Assembly Election) আগে বিরাট চাপে শাসক দল বিজেপি (BJP)। কারণ গাফিলতির একাধিক অভিযোগ উঠছে। প্রথমত, ফিট সার্টিফিকেট ছাড়া দিন পাঁচেক আগে নতুন করে খুলে দেওয়া হয় ব্রিজটিকে। বিরোধীদের বক্তব্য, ভোটের লোভে বিপদের কথা না ভেবে সেতু খুলে দেওয়া হয়। এইসঙ্গে জানা যাচ্ছে, ওরেভা (Oreva Group) নামের যে সংস্থাকে সেতু মেরামতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তাদের এমন কাজের অভিজ্ঞতা ছিল না। তারা বরং সিএফএল বাল্ব, দেওয়াল ঘড়ি, ই-বাইক ইত্যাদি বিশেষজ্ঞ।
ওরেভা গ্রুপের জনপ্রিয় ব্র্যান্ড অজন্তা ও অরপ্যাট। এদের ঘড়ি, সিএফএল বাল্ব, ক্যালকুলেটর ইত্যাদি গোটা দেশে মেলে। পাঁচ দশক পুরনো নামী সংস্থাটির ব্যবসার পরিমাণ ৮০০ কোটি টাকা। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন কেন তাদের সেতু মেরামতির বরাত দিল তা এখন লক্ষ টাকার প্রশ্ন। উল্লেখ্য, স্থানীয়রা মচ্ছু নদীর উপরের কেবল ব্রিজটিকে বলত ‘ঝুলতা পুল’। মেরামতির প্রয়োজনে সাত মাস আগে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। মোরবি পুরসভা সেতু মেরামতির বরাত দেয় সংস্থাকে। এরপর পাঁচদিন আগে গত ২৬ অক্টোবর গুজরাটি নববর্ষে ‘ঝুলতা পুল’ খুলে দেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: ‘তৃণমূলই বিচারপতিদের সম্মান করে না’, মমতাকে পালটা খোঁচা কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর]
ওরেভা কোম্পানির ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যাচ্ছে তাদের হাজারটা ব্যবসা থাকলেও নির্মাণ সংক্রান্ত কোনও বিভাগ নেই। এমন কোম্পানিকে বরাত দিল কেন মোরবি পুরসভা, এক সময় হয়তো এই উত্তর মিলবে। তবে এখনও অবধি ব্রিজ ভেঙে পড়া নিয়ে সরাসরি মুখ খোলেনি কোম্পানিটি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংস্থার এক প্রতিনিধি দাবি করেছেন, ব্রিজে অতিরিক্তি লোক উঠে পড়াতেই বিপদ ঘটেছে। একথা সংস্থার প্রতিনিধি বললেও ক্রমশ গাফিলতির ছবি স্পষ্ট হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: মোরবি ব্রিজ বিপর্যয়ের নেপথ্যে ষড়যন্ত্র! গাফিলতির অভিযোগ উড়িয়ে দাবি বিজেপি নেতার]
যদিও মোরবি ব্রিজ বিপর্যয়ে গাফিলতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র। বরং ব্রিজ বিপর্যয়ের নেপথ্যে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন তিনি। দু’টি টুইটের কথা উল্লেখ করেন গেরুয়া নেতা। যাতে আগেভাগে বলা হয়েছিল গুজরাটে কিছু ঘটতে চলেছে। যার ফলে প্রবল ধাক্কা খাবে বিজেপি। ওই দু’টি টুইটের সূত্র ধরে প্রশাসনিক গাফিলতির অভিযোগকে কার্যত নস্যাৎ করে দিয়েছেন বিজেপি নেতা। তাঁর দাবি, ব্রিজ বিপর্যয় কোনও সাধারণ দুর্ঘটনা নয়, এর নেপথ্যে রয়েছে ষড়যন্ত্র।