অর্ণব দাস, বারাকপুর: মহাত্মা গান্ধীর (Mahatma Gandhi) জন্মদিন ও মৃত্যুদিনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে বারাকপুরের গান্ধীঘাট। এখানেই গান্ধীজির স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন সকলে। প্রশাসনিক স্তরেও নেতা, মন্ত্রীরাও গান্ধীঘাটে একবার পা রেখেই থাকেন। তবে এই দু’দিন সবচেয়ে বেশি নজর থাকে রাজ্যপালের দিকে। চিরাচরিত প্রথা মেনে সাধারণত গান্ধীঘাটে জাতির জনকের স্মৃতিসৌধেই শ্রদ্ধা জানান রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। এ বছরও গান্ধীঘাটে এসেছিলেন সস্ত্রীক রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। আর তাতেই জড়ালেন বিতর্কে। গান্ধীঘাট চত্বরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি দর্শকাসনে বসলেন জুতো (Shoe) পরেই। জুতো ছিল তাঁর স্ত্রী এবং পাশে বসে থাকা সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকেরও। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক (Controversy)। গোটা গান্ধীঘাট চত্বরই অত্যন্ত পবিত্র স্থান। সেখানে খালি পায়ে ঘোরার কথা ফলকে লেখা রয়েছে। রাজ্যপাল, সেচমন্ত্রী তা উপেক্ষা করায় ক্ষুব্ধ বারাকপুরবাসী।
এ বছর মহাত্মা গান্ধীর ৭৬ তম মৃত্যু দিবস। বারাকপুর (Barrackpore)গান্ধীঘাটে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (C V Anand Bose) আসেন ‘বাপু’র স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে। স্মৃতিসৌধ লাগোয়া একটি সিমেন্টের চত্বরে প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে চলছিল নাম সংকীর্তন। তা দেখার জন্য দর্শকাসনে বসেন রাজ্যপাল। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রীও। এছাড়া রাজ্যের সেচমন্ত্রী তথা নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক (Partha Bhowmick), বারাকপুরের বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী ও পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষ।
[আরও পড়ুন: ‘কেষ্টকে ছাঁটতে সাত মাস লাগল?’, অনুব্রতহীন বীরভূমে মমতার সফর নিয়ে খোঁচা দিলীপের]
হঠাৎই চোখে পড়ে মঞ্চে জুতো পরেই উঠেছেন রাজ্যপাল। আর তা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। তবে শ্রদ্ধা জানানোর সময় তিনি জুতো খুলেই গান্ধীর স্মৃতিসৌধে মাল্যদান করেন। মঞ্চে রাজ্যপালের পাশেই ছিলেন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। তিনিও পায়ে জুতো নিয়ে প্রার্থনা মঞ্চে উঠে যান। নিয়ম ভাঙা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ”আমি প্রথম এসেছি এখানে। বুঝতে পারিনি। রাজ্যপাল পায়ে জুতো পরে উঠে গিয়েছিলেন। আমি তাঁকে ফলো করেছি।”
[আরও পড়ুন: মমতার পথেই মোদি! কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি নিয়ে মানুষের ঘরে পৌঁছনোর বার্তা মন্ত্রীদের]
প্রসঙ্গত, বারাকপুরের গান্ধীঘাটে কর্মজীবনের অনেকটাই কাটিয়েছেন মহাত্মা গান্ধী। তাঁর শেষ জীবনের সঙ্গেও জড়িয়ে গান্ধীঘাট। পরে তাই তাঁর স্মৃতিতে এখানে তৈরি হয় সৌধ। গঙ্গার ধারে অনেকটা অংশ জুড়ে গান্ধীঘাট গড়ে ওঠে। ঐতিহাসিক এই স্থানের গুরুত্ব ও জনপ্রিয়তা অনেকটা। এমন জায়গায় গিয়ে জুতো বিতর্কে জড়ালেন নতুন রাজ্যপাল। অনেকেই বলছেন, বাংলা চিনতে বেরিয়ে বাংলার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি সম্পর্কে তেমন খোঁজখবর রাখছেন না তিনি।