শুভঙ্কর বসু: মদের বোতল, টাকার তোড়া, গাঁটরি বোঝাই ছাপা শাড়ি! ভোটারদের মন জিততে এইসব উপঢৌকন নিয়ে অনেক সময়ই মাঠে নামেন প্রার্থীরা। এবার সেই ‘ভেটে’র তালিকায় নতুন সংযোজন ইলিশ মাছ, বিড়ি এমনকী পানমশলার পাউচও! তালিকায় নতুন সংযোজন দেখে মাথায় হাত কর্তাদের।
ভোট ঘোষণার পর থেকে এখনও রাজ্যে মোট ৫২ কোটি ৫৭ লক্ষ অর্থমূল্যের বেআইনি সামগ্রী উদ্ধার হয়েছে। ফি-বছরই বঙ্গে ভোটের আগে বেআইনি মদ, সোনা ও নগদ অর্থের বাড়বাড়ন্ত দেখা যায়। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনেও বেআইনি মদ ও সোনা উদ্ধারে গোটা দেশে প্রথম পাঁচে ছিল বাংলা। বহু সময় ধরে ভোটারদের প্রভাবিত করতে সাধারণত মদ, মাদক ও নগদ অর্থের বিপুল ব্যবহার হয়ে আসছে। সেজন্য ভোট (Elections 2021) ঘোষণা হতেই নজরদারিও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এবার কি সেই প্রথাগত উপঢৌকন সামগ্রীর চরিত্র বদলে গেল? তালিকার বহর দেখে কমিশন কর্তাদের মনে এমন আশঙ্কাই উঁকি মারছে।
[আরও পড়ুন : বঙ্গের নির্বাচনী প্রচারে বিজেপির ৪০ তারকা প্রচারক, তালিকায় বাংলার কারা?]
কারণ, এবার বেআইনি সামগ্রীর ওই তালিকায় ঢুকে পড়েছে বাঙালির প্রিয় ইলিশও। অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সঞ্জয় বসু জানিয়েছেন, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তল্লাশি চালিয়ে এখনও পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে ১৫ কেজি চোরাই ইলিশ, ৫২৫ বান্ডিল বিড়ি, ৫০ ব্যাগ পানমশলা, ৬টি গবাদি পশু, হাতঘড়ি, প্রেসার কুকার, রান্নার বাসনপত্র, মহিলাদের বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী। এছাড়াও উদ্ধার হয়েছে মোবাইল ফোন, সাইকেল, মোটর সাইকেল, শাড়ি, রেডিমেড কাপড়, ধান এবং ইউরিয়া সারের মতো সামগ্রীও।
এসব বেআইনি সামগ্রী ভোটের (WB Election 2021) ‘ভেট’ হিসাবে ব্যবহার হবে না তো? স্বাভাবিকভাবেই এই প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনা হল, ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রায় ২১ কোটির মতো নগদ অর্থ ও প্রায় ৩৫ কোটি অর্থমূল্যের মদ ও মাদক উদ্ধার হয়েছিল। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যে ছবিটা পালটে যায়। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে রাজ্য থেকে মোট ১১১ কোটি ৯৫ লক্ষ অর্থমূল্যের সামগ্রী উদ্ধার হয়েছিল। উদ্ধার তালিকায় এত বৈচিত্র্য ছিল না। যার সিংহভাগই ছিল বেআইনি নগদ, চোরাই সোনা এবং বেআইনি মদ ও মাদক। নির্বাচনী আধিকারিকদের ধারণা, যা ট্রেন্ড, তাতে ভোট যত এগোবে বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী উদ্ধারের ঘটনাও আরও বাড়বে। সেকথা মাথায় রেখেই রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকা-সহ সর্বত্র নজরদারি আরও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।