সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: রাজ্য বিধানসভায় বাজেট ভাষণের শুরুতেই ধাক্কা, উত্তপ্ত হয়ে উঠল পরিস্থিতি। বিজেপি বিধায়কদের হইহট্টগোলে কার্যত মাঝপথে থমকে গেল রাজ্যপালের ভাষণ। বাজেট ভাষণ অসম্পূর্ণ রেখে মাত্র ৪ মিনিটের মধ্যে বিশৃঙ্খলা এড়িয়ে বিধানসভা থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Jagdeeep Dhankhar)। নজিরবিহীন এই ঘটনার জেরে বাজেট অধিবেশনের শুরুতেই ধাক্কা খেল গোটা কার্যপদ্ধতি। পালটা বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল বিধায়করাও।
তৃতীয়বার তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর শুক্রবার থেকে রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশন (Budget Session) শুরুর কথা ছিল। কোভিড পরিস্থিতিতে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য বিধানসভা কক্ষে কোনও ক্যামেরা প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। নির্ধারিত সময়ে মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল, স্পিকার – সকলেই বিধানসভায় হাজির হলে অধিবেশন শুরু হয়। প্রথা অনুযায়ী, রাজ্যপালের উদ্বোধনী ভাষণ দিয়ে বিধানসভার কার্যপদ্ধতির সূচনা হয়। এবার কোভিড পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের সেই ভাষণের লাইভ সম্প্রচার হয়নি। তা ঘিরে আগেই অসন্তোষ ছিল। তবে তিনি ভাষণ শুরুর পরপরই বিজেপি (BJP) বিধায়করা ওয়েলে নেমে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু করে দেন। রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসায় আক্রান্তদের ছবি নিয়ে চলে বিক্ষোভ। ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পালটা তৃণমূল বিধায়করাও হইহট্টগোল জুড়ে দেন। ‘ধনকড় হঠাও’, ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে মুখর হন শশী পাঁজা, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যরা।
[আরও পড়ুন: ‘তৃণমূলের পদাধিকারী দেবাঞ্জন!’, বিস্ফোরক দাবি দিলীপের, পালটা দিলেন কুণাল]
মাত্র ৪ মিনিট ভাষণ দেওয়ার পরই এই নজিরবিহীন বিক্ষোভে তিনি থামিয়ে দিতে বাধ্য হন। বক্তৃতার শেষ লাইনটি কোনওক্রমে পড়ে শেষ করে দেন। এরপরই বেরিয়ে যান বিধানসভা থেকে। মুখ্যমন্ত্রী ও স্পিকার তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু রাজ্যপাল বেরিয়ে যান।
সূত্রের খবর, বিধানসভায় সরকারকে চাপে ফেলতে এমনই কৌশল নিয়েছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পরামর্শেই এই সিদ্ধান্ত। ভোট-পরবর্তী হিংসা বন্ধের দাবিতে বিজেপি বিক্ষোভ ও ওয়াকআউট করেছে বলে জানিয়েছেন বিরোধীদলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা। তবে অন্যরা বেরিয়ে গেলেও কক্ষে থেকে যান মুকুল রায়। তাঁর সঙ্গে গিয়ে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী, স্পিকার। তবে বিধানসভায় এ ধরনের বিক্ষোভ নজিরবিহীন বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। রাজ্যপালের উদ্বোধনী ভাষণেই এমন বিশৃঙ্খলা সাম্প্রতিক সময়ে হয়েছে বলে মনে করতে পারেন না কেউই। আসলে, রাজ্য সরকারের লিখে দেওয়া খসড়া বক্তৃতাই মূলত পড়তে হয় রাজ্যপালকে। আর তাতেই আপত্তি বিরোধী বিজেপির। তাই তাঁরা শুরুতেই প্রতিবাদ জানিয়েছেন, এমনই খবর বিজেপি সূত্রে।