নন্দন দত্ত, সিউড়ি: মাঘের শেষে অকাল বৃষ্টিতে চাষের চরম ক্ষতির আশঙ্কা জেলা কৃষি দপ্তরের। শুক্রবারের ভোররাত থেকে অবিরাম বৃষ্টিতে (Rain in Bengal) রবি ফসলের মাঠে জল জমেছে। মেঘ কেটে কড়া রোদ উঠলেই আলুর ধসা রোগ, সরষে, মসুর জাতীয় তৈলবীজে ছত্রাক রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা। এমনকী পাকা ফসল পচে যেতে পারে বলে আশঙ্কা চাষিদের। তাই ফসল বাঁচাতে জেলার প্রতিটি কৃষি দপ্তরের যোগাযোগ শুরু করেছেন কৃষকরা।
প্রতি মাসে নিয়ম করে বৃষ্টি। নয় মেঘলা আবহাওয়া। চরম ক্ষতির মুখেও চাষিরা ফসল বাঁচাতে তৎপরতা দেখিয়েছেন। কিন্তু মাঘের শেষে এই ভারী বৃষ্টিতে ফসল রক্ষা করা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় কৃষকরা। এমনিতেই গত ডিসেম্বরের নিম্নচাপের জেরে মাটিতে জলের পরিমাণ বেশি থাকায় দেরি করে আলু চাষ শুরু হয়েছে। মাটির তলায় আলু ধরার সময় গত মাসে লাগাতার মেঘলা আবহাওয়া ক্ষতি করেছে আলু, মসুর, সরষে-সহ সব ধরনের তৈলবীজের। ধসা রোগ থেকে বাঁচাতে ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করে কিছুটা রক্ষা করতে পেরেছিলেন চাষিরা।
[আরও পড়ুন: ফের বেপরোয়া গাড়ির দৌরাত্ম্য, কাঁকুড়গাছিতে ম্যাটাডোরের চাকায় পিষ্ট মহিলা]
জেলা কৃষি দপ্তরের হিসাবে জেলায় ১৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু রোপণ করা হয়েছে। একইভাবে জেলায় তৈলবীজের চাষ হিসাবে সরষে চাষ হয়েছে ৪৩০৪০ হেক্টর জমিতে। মসুর হয়েছে ২০ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে। এই অকালবৃষ্টিতে তিন ধরনের ফসলেই ক্ষতির সম্ভাবনা। পেকে ওঠা আলুতে জল জমে পচে যাবে। সরষের ফুল বৃষ্টিধারায় খসে যাবে, মসুরে পচন ধরবে। সাঁইথিয়া হরিসরার মিহির মণ্ডল, রবি হাঁসদা, সুকুমার দত্তরা বলেন, বৃষ্টিতে মাঠের ফসল মাঠে পচে যাবে। রোদ উঠলেই সব গলে যাবে। তাঁদের দাবি, এবছর আলু চাষে বিঘা প্রতি ২০-২৫ হাজার টাকা করে খরচা হয়েছে। কীভাবে এই ক্ষতিপূরণ হবে জানি না। ভবানীপুর, মোনাই, মতিপুর। ললিয়াপুর, কেশবপুর, নারান ঘাঁটি-সহ ময়ূরেশ্বরের বিস্তীর্ণ এলাকায় আলু জমিতে জল জমেছে।
কৃষি দপ্তর সূত্রে খবর, সারা জেলায় এবার গমের চাষ হয়েছে ২২২৫০ হেক্টর জমিতে। ছোলা হয়েছে ১১২২৫ হেক্টর জমিতে। এই আবহাওয়া গমের বা ধানের খুব একটা ক্ষতির আশঙ্কা নেই। তবে বীরভূম জেলা আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সিউড়িতে ৩৮, সাঁইথিয়ায় ৮, ইলামবাজারে ১৫, বোলপুরে ১০, নানুরে ৫২ ও রামপুরহাটে ৪২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। পরে বিকেল পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে জেলায়। ফলে শুধু ফসলের ক্ষতি নয়, বাজার দর বাড়ার শঙ্কা রয়েছে।