গৌতম ব্রহ্ম: যুদ্ধের তাপে তেতে ওঠা ইউক্রেন (Ukraine) থেকে কার্যত পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন সেখানে কর্মরত ব্যক্তি, পড়ুয়ারা। কিন্তু তারপরই প্রশ্ন ওঠে, এই পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ কী হবে? তাঁদের কেরিয়ার যাতে স্রেফ যুদ্ধের কারণে নষ্ট না হয়, তার জন্য এগিয়ে আসেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। তিনি ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের সঙ্গে মার্চ মাসে ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে দেখা করে রাজ্যে তাঁদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন। জানান, কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানাবেন তিনি। তবে একমাসেরও বেশি সময় কেটে যাওয়ার পর কেন্দ্রের তরফে কোনওরকম সাড়া না পাওয়ায় ফের নতুন করে ইউক্রেন ফেরতদের জন্য সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। রাজ্যেরই বিভিন্ন বেসরকারি কলেজে তাঁদের ভরতির ব্যবস্থা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার নবান্নে জরুরি বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান –
- ইউক্রেনে মেডিক্যাল (Medical) কোর্স ছেড়ে ফিরেছেন ৪১২ জন।
- তাঁদের মধ্যে ৩ জন ডেন্টাল (Dental)কোর্সে পড়াশোনা করছিলেন।
- এঁদের মধ্যে কোর্স শেষ করে ফেরা এক ডেন্টাল পড়ুয়াকে সরকারি ডেন্টাল কলেজে ইন্টার্নশিপের (Internship)ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাকি ২ জন এখানে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস করতে পারবেন, বাকিটা ইউক্রেনের যে কলেজ তাঁরা পড়তেন, সেখানে অনলাইন ক্লাস করবেন।
- একজন ভেটেরনারি সার্জনকে রাজ্যের অ্যানিমাল অ্যান্ড ফিশারিজ সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
- এছাড়া ৩ জন ইউক্রেন থেকে চাকরি নিয়ে ফিরেছেন দেশে। তাঁদের মধ্যে ২ জনকে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকের দপ্তরে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। আরেকজন দুবাইয়ে চাকরি পেয়ে ইতিমধ্য়েই রাজ্য ছেড়েছেন।
[আরও পড়ুন: ‘আমি এখনও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখি’, হঠাৎ কেন এমন বললেন মায়াবতী?]
ডাক্তারির ক্ষেত্রে বিভিন্ন বর্ষে পড়ুয়াদের নানারকম সুযোগ-সুবিধা করে দেওয়া হয়েছে রাজ্যের তরফে।
- প্রথম বর্ষের যে পড়ুয়ারা NEET’এর মাধ্যমে সুযোগ পেয়েও ইউক্রেনে গিয়ে ডাক্তারিতে ভরতি হয়েছিলেন, তাঁরা সরাসরি কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে রাজ্যে বিভিন্ন বেসরকারি কলেজগুলোয় ভরতি হতে পারবেন।
- দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়ারা সরকারি কলেজে প্র্য়াকটিক্যাল ক্লাস করার সুযোগ পাবেন।
- চতুর্থ ও পঞ্চম বর্ষের ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে ‘অবজার্ভিং সিট’ পাবেন।
[আরও পড়ুন: ৩ জন দেহরক্ষী থাকার পরেও প্রাণহানির আশঙ্কা, নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি তৃণমূল বিধায়কের]
সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই মুখ্যমন্ত্রী এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান। এমন অসময়ে কেন্দ্র পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ায়নি বলেও তোপ দাগেন। পাশাপাশি, ফের পেট্রল-ডিজেলের দাম নিয়ে কেন্দ্রের ‘অসংবেদনশীল’ মন্তব্য নিয়েও সরব হন তিনি।