সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলায় রেকর্ড করোনা সংক্রমণ। রাজ্যের দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার পার করল। সোমবারের তুলনায় একধাক্কায় প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়ল দৈনিক সংক্রমণ। রেহাই নেই কলকাতারও। বেলাগাম সংক্রমণ। আক্রান্ত হয়েছেন সাড়ে চার হাজারেরও বেশি। ভাইরাসের বাড়বাড়ন্তে উদ্বিগ্ন প্রায় সকলেরই।
রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্ত ৯ হাজার ৭৩ জন। যা গত কয়েকদিনের নিরিখে রেকর্ড। তার মধ্যে কলকাতায় সংক্রমিত ৪ হাজার ৭৫৯ জন। সংক্রমণের নিরিখে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা। উত্তর ২৪ পরগনায় দৈনিক আক্রান্ত ১ হাজার ৩৯১ জন। তবে ঊর্ধ্বমুখী কোভিড গ্রাফের মাঝে বিপরীত ছবি কালিম্পংয়ে। সেখানে দৈনিক আক্রান্ত মাত্র ২ জন। এখনও পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৬ লক্ষ ৬৪ হাজার ৩০১ জন। সংক্রমণের পাশাপাশি মৃতের সংখ্যাও বেড়েছে বেশ খানিকটা। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬ জনের প্রাণ কেড়েছে ভাইরাস। তার ফলে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৯ হাজার ৮১০ জন।
[আরও পড়ুন: ওমিক্রনের থেকেও সংক্রামক! উদ্বেগ বাড়িয়ে ফ্রান্সে মিলল করোনার নয়া স্ট্রেন]
ক্রমশ বাড়ছে টেস্টিং। মঙ্গলবার মোট ৪৭ হাজার ৮৬৪ জনের কোভিড টেস্ট হয়েছে। এথনও পর্যন্ত ২ কোটি ১৫ লক্ষ ৪৬ হাজার ৯৪১ জনের কোভিড টেস্ট হয়েছে। পজিটিভিটি রেট ১৮.৯৬ শতাংশ। মঙ্গলবারের তুলনায় যদিও পজিটিভিটি রেট কমেছে কিছুটা। কারণ, গতকাল সংখ্যাটা ছিল ১৯.৫৯ শতাংশ। কোভিড টিকার দু’টি ডোজ নেওয়ার পরেও ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। তা সত্ত্বেও টিকাকরণ কর্মসূচিতেই আরও জোর দিতে হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। মঙ্গলবার কোভিড টিকা নিয়েছেন ৮ লক্ষ ৪৯ হাজার ৭৮১ জন। প্রথম ডোজ নিয়ে ২ লক্ষ ৪০৭ জন। এবং বাকি ৬ লক্ষ ৪৯ হাজার ৩৭৪ জন নিয়েছেন টিকার দ্বিতীয় ডোজ।
করোনার বাড়বাড়ন্ত রুখতে তৎপর রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে বঙ্গে জারি কড়া বিধিনিষেধ। কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়ার বিভিন্ন এলাকাকে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কলকাতায় ২৫, দুই ২৪ পরগনায় মোট ১১৮টি, হাওড়ায় ২৬টি মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন। এদিকে, স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও থাবা ক্রমশ চওড়া হচ্ছে করোনার। চিত্তরঞ্জন সেবাসদনে ৩ দিনে ৮০ জন আক্রান্ত হওয়ায় হস্টেল খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার-সহ আক্রান্ত ১২ জন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে করোনা সংক্রমিত মোট ২৫ জন। জলপাইগুড়ি চিকিৎসক এবং নার্সিং স্টাফ-সহ আক্রান্ত ৫ জন। পোলবা হাসপাতালের বিএমওএইচ-সহ আক্রান্ত ৪ জন। আসানসোল জেলা হাসপাতালে সংক্রমিত ১০ জন। এই পরিস্থিতিতে সামাল দিতে ১২০ শয্যার বারাকপুরের বি এন বোস হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার উপযোগী করে তোলা হয়েছে।