সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কলকাতা হাই কোর্টের তরুণ আইনজীবীর মৃত্যুরহস্যে নয়া মোড়৷ জেরায় লাগাতার বয়ান বদল ও বেশ কিছু অসঙ্গতি মেলায় অবশেষে মৃত আইনজীবী রজতকুমার দে’র স্ত্রী অনিন্দিতা পালকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ৷ অভিযোগ, প্রথম থেকেই আইনজীবীর রহস্য মৃত্যুর পিছনে আত্মহত্যার যুক্তি দিতে থাকেন ধৃত অনিন্দিতা৷ পরে, দফায় দফায় শুরু হয় পুলিশি জেরা৷ মৃতের স্ত্রী বয়ান বদলাতেও থাকেন৷ খুনের ঘটনায় স্ত্রীর হাত আছে, এই সন্দেহে তাঁকে আটক করে পুলিশ৷ পরে মৃতের ময়নাতদন্তের রিপোর্টের সঙ্গে স্ত্রীর পরিবর্তিত বয়ানে অসঙ্গতি মেলায় অনিন্দিতাকে গ্রেপ্তারির সিদ্ধান্ত নেন তদন্তকারীরা৷
[ভুয়ো কল সেন্টার খুলে কোটি টাকার প্রতারণা, গোয়েন্দাদের জালে ৪ অভিযুক্ত]
পুলিশ সূত্রে খবর, আইনজীবীর স্ত্রী অনিন্দিতা পাল দে প্রথমে জানিয়েছিলেন, ঘটনার দিন তিনি স্বামীকে অচৈতন্য অবস্থায় দেখতে পান। গায়ে হাত দিয়ে ডাকার পর পড়ে যান রজত। পরে বয়ান বদলে তিনি বলেন, বিছানার চাদর গলায় জড়িয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। কিন্তু মৃতের গলায় সরু (০.৫ সিএম) দাগ পাওয়া গিয়েছে। চাদর এবং অনিন্দিতার হাউস কোট ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠিয়েছে পুলিশ। মৃত্যুর আগে রজত মোবাইলে গ্রুপ চ্যাট করছিলেন। মৃত্যুর আগে শেষ ৩০ মিনিট কী হয়েছিল তা জানার চেষ্টা চলছে।
[চোলাইয়ের কারবারের রমরমা নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ক্ষোভপ্রকাশ মমতার]
গত ২৬ নভেম্বর নিউটাউনের বিবি ব্লকের একটি আবাসনের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় আইনজীবীর দেহ। নিউটাউন থানায় প্রথমে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়। ২০১৬ সালে এই দম্পতির বিয়ে হয়। পরের বছরই তাঁদের সন্তান জন্ম নেয়। রজত এবং অনিন্দিতা দু’জনই আইনের ছাত্র ছিলেন। পরে স্বামী হাই কোর্টে প্র্যাকটিস করলেও স্ত্রী কিছু করতেন না। তিনি আইআইএমসি-তে ‘এক্সিকিউটিভ ম্যানেজমেন্ট’-এর একটি কোর্স করতেন। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ছিল অনিন্দিতার জন্মদিন। স্বামী তাঁকে মিউজিক সিস্টেম উপহার দেন। কিন্তু ফেসবুকে নানা স্টেটাস থেকে পরিষ্কার অনিন্দিতা বিয়েতে সুখী ছিলেন না। ৭ নভেম্বর তিনি শেয়ার করেছেন, ‘বিয়ে একটা পাবলিক টয়লেট’।
[কর্মপ্রার্থীদের জন্য সুখবর, ৭ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করবে রাজ্য]
একইদিনে ফেসবুকে তিনি শেয়ার করেন, ‘বাজি না ফাটিয়ে বিয়ে করুন, দেখুন রোজই ফাটছে৷’ ২২ নভেম্বর তিনি ‘প্রাক্তন প্রমিককে কুচি কুচি করে কেটে রান্না করে খাওয়ানো’র খবর শেয়ার করেছেন। তাহলে কি অনিন্দিতার মধ্যেও স্বামীর প্রতি কোনও আক্রোশ বা ঘৃণা কাজ করত? নিজে বা কারও সাহায্য নিয়ে তিনি স্বামীকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিয়েছেন? উত্তর আপাতত অধরা। রজতবাবু নিউটাউনের স্ত্রীর সঙ্গে থাকতেন। অনিন্দিতার ফেসবুক প্রোফাইল দেখে পুলিশের অনুমান তিনি দাম্পত্যে সুখী ছিলেন না৷ মৃতের বাবা সমীর কুমার দের অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু হয়।
The post আইনজীবী রজত দে খুনে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার স্ত্রী অনিন্দিতা appeared first on Sangbad Pratidin.