সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: মহিলা কুস্তিগিরদের আন্দোলনে সাক্ষী মালিক, বজরং পুনিয়াদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ছেন ভিনেশ ফোগাট, সংগীতা ফোগাটরা। অথচ আশ্চর্যজনকভাবে চুপ তাঁদের দিদি ববিতা (Babita Phogat)। যাঁর আরেকটি পরিচয়, তিনি ২০১৯ সালে হরিয়ানা বিধানসভায় বিজেপির টিকিটে প্রার্থী হয়ে পরাস্ত হয়েছিলেন এবং উত্তরপ্রদেশে ভারতীয় যুব মোর্চার কো-ইনচার্জ।
গত রবিবার যখন ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের (Brij Bhushan Sharan) বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন কুস্তিগিররা, তখন তাঁদের হয়ে সরব হওয়া তো দূর, রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Modi) জয়গান করতে দেখা যায় ববিতাকে। গত একমাসে যখন যন্তর মন্তরে বসে ধারাবাহিক আন্দোলন করে গিয়েছেন ভিনেশ-সংগীতা, তখন তাঁদের দিদি কখনও প্রধানমন্ত্রী, কখনও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, কখনও আবার অন্য কোনও বিজেপি নেতা ও দলের হয়ে সামাজিক মাধ্যমে ঢোল বাজাতে ব্যস্ত থেকেছেন ববিতা।
[আরও পড়ুন: বাংলায় বাড়ছে পদোন্নতির সুযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় খুশি সরকারি কর্মীরা]
ভিনেশ-সংগীতারা না হয় ববিতার তুতো বোন। চলতি মাসের শুরুতেই কুস্তিগিরদের হয়ে সওয়াল করেছেন ববিতার বাবা মহাবীর সিং ফোগাটও। বলেছেন, “দ্রুত ব্রিজভূষণকে গ্রেপ্তার করে ন্যায়বিচার করতে হবে। নাহলে দ্রোণাচার্য পদক ফিরিয়ে দেব।” বাবা তথা গুরুর দেখানো পথেও দঙ্গলে নামার পরিবর্তে রাজনৈতিক দিকই বেছে নিয়েছেন ববিতা। প্রশ্ন, নিজের দলের কোনও নেতা যদি অন্যায় করেন, তার প্রতিবাদও কি করা যায় না?
বুধবার এক অনুষ্ঠানে ববিতার সঙ্গে দেখা হয় কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী স্মৃতি ইরানির। সেই ছবি টুইট করেও স্মৃতিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ববিতা। আর স্মৃতি? তিনি বললেন, “একটু আগেই আমার সঙ্গে ববিতার কথা হল। আপনার কি মনে হয় ববিতার মতো একজন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন তাঁদের সঙ্গে থাকবেন, যাঁরা তাঁর পরিবারের মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন?” অর্থাৎ না বলেও স্মৃতি বলে গেলেন, ভিনেশ-সংগীতারা মিথ্যে বলছেন। এই বক্তব্যের কোনও উত্তর না দিয়ে মৌনতাই সম্মতির লক্ষণকে কি প্রতিষ্ঠা করলেন ববিতা? নাকি রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষায় মুখে কুলুপ এঁটে রইলেন? উত্তর দেবে সময়।