সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এখনও অধরা সল্টলেক গণধর্ষণের অন্যতম মূল অভিযুক্ত৷ তার সন্ধানে আশপাশের জেলায় তল্লাশি চালাচ্ছেন বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দারা৷ একই সঙ্গে জোর দেওয়া হচ্ছে যাতে কোনওভাবে চতুর্থ অভিযুক্ত রাজ্য ছেড়ে ভিন রাজ্যে গা ঢাকা দিতে না পারে৷ একই সঙ্গে সীমান্ত গা ঢাকা দেওয়ার সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা৷ তবে সূত্রের খবর, চতুর্থ অভিযুক্তর মোবাইল টাওয়ার লোকেশন দেখে বেশ কয়েকটি জায়গাকে চিহিত করেছেন বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দারা৷ দ্রুত তার হদিশ মিলে যাবে৷
অন্যদিকে বুধবার দুপুরে আদালতে পেশ করা হয় এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া তিন অভিযুক্ত শুভেন্দু নাগ, সৌরভ দে ও অর্ণব বেরা ওরফে বাপ্পাকে৷ আদালত ধৃতদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে৷ পাশাপাশি অভিযুক্তদের টিআই প্যারেডের অনুমতিও দিয়েছে আদালত৷ ধর্ষিতা তরুণীর গোপন জবানবন্দি নেওয়ার জন্যও আবেদন জানানো হয় পুলিশের তরফে৷ আজই গণধর্ষণে ব্যবহৃত গাড়িটির ফরেন্সিক নমুনা সংগ্রহ করা হয়৷
ধৃতদের দফায় দফায় জেরা করে বিধাননগর সিটি পুলিশের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, রবিবার রাতে সেক্টর ফাইভের একটি পানশালার সামনে তাদের সঙ্গে আলাপ হয় ওই বার নর্তকীর৷ এরপরেই তাকে টাটা সুমোয় চাপিয়ে অ্যাকোয়াটিকার কাছে নিয়ে গিয়ে গাড়ির মধ্যেই ধর্ষণ করে ধৃতরা৷ তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনে অভ্যস্ত ওই তরুণী রবিবার মদ্যপ অবস্থায় নিজের কর্মস্থল বাঙুরের পানশালায় যান৷ কিন্তু সেখান থেকে তিনি কিছু সময় পর বেরিয়েও যান৷ এর পরই রাত ১১টা ১২ মিনিটে উবের চেপে ওই তরুণী চলে আসেন হোটেল হিন্দুস্থান ইন্টারন্যাশনাল৷ সেখানে কিছুক্ষণ ছিলেন তিনি৷ ১১টা ৪০মিনিটে তিনি একটি ওলা ডাকেন৷ সেই ওলায় চেপে রাত ১২টা নাগাদ পৌঁছন সেক্টর ফাইভের একটি পানশালায়৷ সেই পানশালায় বেশ কিছুক্ষণ কাটানোর পর বেরিয়ে এসে অপেক্ষা করতে থাকেন বাইরের একটি পানের দোকানে৷ দোকানে তখন সিগারেট কিনছিল তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্রে পুলকারের চালক, চৌবাগার যুবক শুভেন্দু৷ সেখানেই ওই তরুণীর সঙ্গে আলাপ হয় তার৷ এরপর অর্ণব, সৌরভদের ডেকে নেয় সে৷ বাকি তিন বন্ধু আসতেই টাটা সুমোয় তরুণীকে তুলে নেয় তারা৷ যদিও পুলিশ জানিয়েছে, জোর করে নয় স্বেচ্ছায় নিজেই টাটা সুমোয় ওঠে ওই তরুণী৷ সেই ছবিও সিসিটিভির ক্যামেরায় ধরা পড়েছে৷
তদন্তে নেমে এসডিএফ মোড়ের কাছে সিসিটিভির ফুটেজে সেই টাটা সুমোর নম্বর পায় পুলিশ৷ গাড়ির মালিককে জেরা করে জানা যায়, গাড়িটি ভাড়ায় চালান শিবু সাউ নামে এক ব্যক্তি৷ তাঁকে জেরা করে পলাতক শুভেন্দুদের হদিশ পায় পুলিশ৷ ততক্ষণে সুভাষ সরোবরের কাছে ওই টাটা সুমোর সন্ধান মেলে৷ শিবুর কাছ থেকে তাদের মোবাইল নম্বর পাওয়ার পর সেই নম্বরে টাওয়ার লোকেট করতে থাকে পুলিশ৷ তারই সূত্র ধরে তাদের গ্রেফতার করা হয়৷ অন্যদিকে, রবিবার রাতের এই ঘটনার পরও বদলায়নি তথ্যপ্রযুক্তি নগরীর নিরাপত্তার ছবিটা৷ সেখানকার কর্মচারীদের অভিযোগ, রাত আটটা বাজলেই রাস্তায় বাস, ট্যাক্সির দেখা মেলে না৷ সব সময় ওলা বা উবেরের মতো লাক্সারি ট্যাক্সিও মেলেনা৷ আজও এক নাবালিকাকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে সল্টলেকে৷
The post সল্টলেক গণধর্ষণ-কাণ্ড: তিন অভিযুক্তর জেল হেফাজত appeared first on Sangbad Pratidin.