সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অতিমারীর যুগে কড়া বিধিনিষেধের মধ্যে বিয়ে করাও যেন কঠিন চ্যালেঞ্জ। আর সেই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হন ব্যান্ডেলের বাসিন্দা আম্রপালি রায়। বিবাহ অনুষ্ঠানে বিধি শিথিলের অনুরোধ জানান তিনি। কনের মন রাখেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee)। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মেলে সাড়া। এবার নিশ্চিন্তে অতিথি সমাগমে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে পারবেন। উচ্ছ্বসিত পাত্রী নিজের জীবনের এই বিশেষ দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও নিমন্ত্রণ জানালেন।
ঠিক কী সমস্যা তৈরি হয়েছিল? কীভাবেই বা মিটল? একটু খুলে বলা যাক। ব্যান্ডেলের বনমসজিদ এলাকায় বাড়ি আম্রপালির রায়ের। বৈদ্যবাটির সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার শান্তনু দের সঙ্গে আগামী ২৪ জানুয়ারি সাত পাকে বাঁধা পড়ার কথা তাঁর। কর্মস্থলের প্রেমকে পরিণয়ে বদলে দিতে গত বছর থেকেই দুই বাড়িতে শুরু হয় তোড়জোড়। আম্রপালির বাবা রঞ্জন রায় সরকারি কর্মীর পাশাপাশি নাট্যকর্মীও। মা অঞ্জনা রায় গৃহবধূ। একমাত্র মেয়ের বিয়েতে কোনও ঘাটতি রাখতে চান না তাঁরা। কার্ড ছাপিয়ে অন্তত ৬০০ জনকে নিমন্ত্রণ করা হয়। কিন্তু নতুন বছরে করোনা গ্রাফ (COVID-19) ঊর্ধ্বমুখী হতেই শুরু যাবতীয় সমস্যার।
[আরও পড়ুন: সিঁথিতে বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছাই সাত সন্তান, ধ্বংসস্তূপে মরিয়া হয়ে খুঁজছে মা সারমেয়]
সংক্রমণ রুখতে ফের কড়া বিধিনিষেধের পথে হাঁটে রাজ্য। জানিয়ে দেওয়া হয়, বিয়ের অনুষ্ঠানে ৫০ জনের বেশি নিমন্ত্রণ করা যাবে না। এত আত্মীয় পরিজন, বন্ধুবান্ধবকে কীভাবে কার্ড পাঠিয়েও বিয়েতে আসতে নিষেধ করবেন, ভেবে কূলকিনারা করে উঠতে পারেনি আম্রপালির পরিবার। তাই শেষমেশ টুইটারে মুখ্যমন্ত্রীর কাছেই বিধি শিথিলের অনুরোধ জানান আম্রপালি। তাঁর আরজি ছিল, ৫০ জনের বদলে যদি অনুষ্ঠানের ভেন্যু অনুযায়ী ৫০ শতাংশ অতিথির অনুমতি দেওয়া হয়, তাহলে ভাল হয়। মাত্র ৫০জনের উপস্থিতিতে সামাজিক বিয়ে কার্যত অসম্ভব। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পাত্রীর মন খারাপ বদলে যায় আনন্দে। রাজ্যের নয়া নির্দেশিকায় জানা যায়, ১৬ জানুয়ারি থেকে বিয়ের অনুষ্ঠানে ২০০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো যাবে। আম্রপালির বিশ্বাস, তাঁর অনুরোধে সাড়া দিয়েই সিদ্ধান্ত বদলেছে রাজ্য সরকার।
অতিথি তালিকা ৬০০ থেকে কমিয়ে ২০০ করা হয়েছে। আম্রপালি জানাচ্ছেন, সমস্ত কোভিডবিধি মেনেই বিয়ের আয়োজন হবে। মুখ্যমন্ত্রীকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সোমবার টুইটারে বিয়ের কার্ড পোস্ট করে মুখ্যমন্ত্রীকে ব্যান্ডেলে তাঁদের বিবাহ অনুষ্ঠানে হাজির হওয়ার আমন্ত্রণও জানান আম্রপালি।