সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাতা ‘ঝরে, কাণ্ড শুকিয়ে বার্ধক্যে পৌঁছে যাওয়ার পর পৃথিবীর কাছে প্রয়োজন ফুরোয়। জরা গ্রাস করে। তীব্র আঘাতে নিজেকে মাটিতে মিশে দিতে দেখা ছাড়া কিছু করার থাকে না। সত্যিই কি তাই? এরও ব্যতিক্রম আছে। সেই ব্যতিক্রমী কাজ করে দেখিয়েছেন মার্কিন মুলুকের এক বইপ্রেমী। শতবর্ষ প্রাচীন মৃত গাছের গায়ে তিনি দিব্যি তৈরি করেছেন ছোটখাটো গ্রন্থাগার। সংকীর্ণ দরজা, উজ্জ্বল আলো, রাশি রাশি বই থরে থরে সুন্দর করে সাজানো। পথ চলতে চলতে টুক করে ঢুকে পড়তে পারেন ফ্রি ট্রি লাইব্রেরিতে। কোনও খরচ নেই। কাঠের চেয়ার, টেবিলে বসে পড়ুন যতক্ষণ খুশি।
[সার্ভারে হানা দিয়ে আফ্রিকার এই দেশের টেলিকম পরিষেবা বিপর্যস্ত করল হ্যাকার]
উদ্যোক্তা আমেরিকার ইদাহোর পঞ্চাশোর্দ্ধ মহিলা শার্লি আর্মিটেজ হাওয়ার্ড। কোর ডি অ্যালেন শহরে তাঁর বাড়ির সামনে একেবারে দৈত্যের মতো বিশাল চেহারা নিয়ে পড়ে ছিল ১১০ বছরের পুরনো একটি গাছ। যার আয়ু ফুরিয়েছে, দেহাবশেষ রয়ে গেছে। অত বড় গাছের অবলম্বন মোটা থামের মতো কাণ্ডটিকে নির্মূল করে দিতে শার্লির মন সায় দিচ্ছিল না। তখনই বিদ্যুৎ চমকের মতো খেলে গেল বুদ্ধিটা। কাণ্ডটাকে খানিক কেটেছেঁটে ঘরের আদল বানিয়ে ফেললেন। দরজা করলেন, জানলা করলেন। সবটাই গাছের গা হাতুড়ি দিয়ে কুঁদে কুঁদে। তারপর সেই ঘরকে সাজিয়ে গুছিয়ে তৈরি করলেন ছোট একটা লাইব্রেরি। নানা ধরনের বই দিয়ে সাজালেন ওই ঘর। ভেতরে জ্বালিয়ে দিলেন আলো। আসলে জ্বালালেন জ্ঞানের আলো।
প্রত্যন্ত এলাকায় বরফঢাকা রাস্তার পাশে শার্লির ছোট্ট লাইব্রেরি যেন অনেক কিছুর সমষ্টি। এক ছোট ঘরে প্রকৃতির আর পুঁথির শিক্ষার সম্মিলন। লাইব্রেরির দরজা এলাকাবাসীর জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন শার্লি। কনকনে ঠাণ্ডা হোক বা নরম রোদের বসন্ত, যখন খুশি যে কেউ এখানে ঢুকে পড়াশোনা করতে পারেন। কেউ কিছু বলবে না। পরিবার, প্রিয়জন ছেড়ে যাঁরা সুদুর প্রবাসে আছেন, একবার গাছের গ্রন্থাগারে চলে আসুন না, ভালো লাগবে। বই পড়তে পারবেন অন্য আবহে।
The post গাছের ফোকরে বইপত্তর, মার্কিন মুলুকে ভিন্ন গ্রন্থাগারের খোঁজ appeared first on Sangbad Pratidin.