সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাল্যবিবাহ রুখতে কড়া অসম (Assam) সরকার। রাজ্যজুড়ে চলছে গ্রেপ্তারি অভিযান। ইতিমধ্যে নাবালিকাদের বিয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ২ হাজারের বেশি অভিযুক্ত গ্রেপ্তার করেছে অসম পুলিশ। কিন্তু সরকারের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন মহিলারাই। বাবার গ্রেপ্তারি এড়াতে ইতিমধ্যে আত্মঘাতী হয়েছেন এক মহিলা। অন্যদিকে বাবা ও স্বামীকে গ্রেপ্তার করলে আত্মহত্যা করবেন বলেও হুমকি দিয়েছেন আরেক মহিলা। বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ি ঘেরাও করে প্রতিবাদ করছেন তাঁরা। তারপরেও অবশ্য বাল্যবিবাহ নিয়ে নরম মনোভাব দেখাতে রাজি নয় অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। অভিযান চলবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
অসম থেকে বাল্য়বিবাহ নিশ্চিহ্ন করতে মরিয়া সে রাজ্য়ের বিজেপি সরকার। সেই উদ্দেশ্যে রাজ্য়জুড়ে অভিযান চলছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছেন, বাল্যবিবাহের সঙ্গে যুক্ত ৮ হাজার জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে হাজতে রয়েছে ২ হাজার জন। ১৪ বছরের ঊর্ধ্বের নাবালিকার বিবাহের সঙ্গে যুক্ত থাকার অপরাধে গ্রেপ্তার হলে জামিন মিলতে পারে। কিন্তু ১৪ বছরের নিচেক নাবালিকার বিয়ে দিয়ে গ্রেপ্তার হলে জামিনও মিলবে না। এমন ব্যবস্থা করেছে বিজেপি সরকার। কিন্তু তাদের এই অভিযানের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে মহিলারাই।
[আরও পড়ুন: ৫-১১ ফেব্রুয়ারির Horoscope: কর্মস্থলে এই রাশির জাতকদের সমস্যার আশঙ্কা, কী রয়েছে আপনার ভাগ্যে?]
এই অভিযোগে সবচেয়ে বেশি গ্রেপ্তার হয়েছে ধুবরি জেলায়। নাবালিকার বিবাহের সার্টিফিকেট দেওয়ার অভিযোগে মুখতার হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। লাগাতার গ্রেপ্তারির প্রতিবাদে শনিবার তামারহাট থানা ঘেরাও করে মহিলারা। আবার দক্ষিণ অসমে সালামারা মনকাচার জেলার এক মহিলা আত্মঘাতীও হয়েছেন। কারণ, নাবালিকা অবস্থায় বিয়ে হয়েছিল তাঁর। করোনায় স্বামীকে হারিয়েছেন। দুই সন্তান রয়েছে তাঁর। এমন পরিস্থিতিতে তাঁর বাবাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে, এই আশঙ্কায় আত্মহত্যা করেছেন তিনি। আবার গোলোক গঞ্জ এলাকায় বাবা ও স্বামীকে মুক্তি না দিলে আত্মহত্যার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আরেক মহিলা। সবমিলিয়ে সরকারের বাল্যবিবাহ বিরোধী অভিযানের পথে সবচেয়ে বড় কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন মহিলারাই।
এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। আসাউদ্দিন ওয়েইসির দাবি, “গত ৬ বছর ধরে অসমে বিজেপি রাজত্ব করছে। তারপরেও বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে পারেনি তারা। এটা তাদের ব্যর্থতা।ঠ যে সমস্ত নাবালিকাদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে, তাদের জন্য সরকার কী ব্যবস্থা করবে, প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। যদিও কোনও প্রতিবাদেই সরে আসবে না রাজ্য সরকার, তা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তাঁর হুঁশিয়ারি, “প্রয়োজনে ২০২৬ পর্যন্ত এই অভিযান চলবে। অসমে আর কোনও বাল্যবিবাহ হতে দেব না।”