সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা ও ২৬ জনের মৃত্যুর নেপথ্যে পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির। তাঁর নির্দেশেই পরিকল্পিতভাবে এই জঙ্গি হামলা হয়েছে। ভারত নয়, এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন পাকিস্তানের প্রাক্তন সেনা আধিকারিক আদিল রাজা। প্রাক্তন ওই সেনাকর্তার দাবি, আইএসআই এই ধরনের হামলা চালাতে বারণ করেছিল। তারপরও, ব্যক্তিগত স্বার্থে ভারতে এই হামলা চালিয়েছেন মুনির। আদিলের এহেন দাবি প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমতো শোরগোল শুরু হয়েছে।
পহেলগাঁও হামলায় ১১ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত ২৬ জনকে হত্যাকারী জঙ্গিদের গ্রেপ্তার বা নিকেশ করা সম্ভব হয়নি। গত রবিবার সরকারিভাবে এই হামলার তদন্তভার নিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তদন্তভার নেওয়ার পরই প্রাথমিক রিপোর্ট তৈরি করছে এনআইএ। তাতে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে এই হামলার নেপথ্যে রয়েছে লস্কর, পাক সেনা এবং পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের সম্মিলিত ষড়যন্ত্র। এই রিপোর্টের পরই এবার প্রকাশ্যে এল প্রাক্তন পাক সেনা আধিকারিকের বয়ান।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনী থেকে অবসরের পর বর্তমানে লন্ডনে থাকেন আদিল। সেখানে স্বাধীন সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেন। পহেলগাঁও হামলা প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আদিল বলেন, "আমি পাকিস্তান সেনা ও গুপ্তচর সংস্থা (আইএসআই)-এর একাধিক সূত্র মারফৎ জেনেছি পহেলগাঁও হামলার নেপথ্যে পাক সেনা প্রধান মুনির। তাঁর নির্দেশেই এই হামলা হয়েছে।" একইসঙ্গে তাঁর দাবি, "এই হামলার পিছনে অনেক কারণ রয়েছে। তদন্তকারীদের সেদিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। তবে আমার সূত্র মারফৎ এটুকু বলতে পারি উনি ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতেই এই হামলা চালিয়েছেন। আইএসআই এই ধরনের কোনও হামলা চালাতে বারণ করেছিল। তবে তা উনি কানে তোলেননি।"
শুধু তাই নয়, পাকিস্তান সেনার তীব্র সমালোচনা করে মুনির আরও বলেন, "এই ধরনের সন্ত্রাসবাদী হামলা এটাই প্রমাণ করে পাকিস্তানে আইনের শাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন রয়েছে। আমি যে সূত্র থেকে এই সকল তথ্য পেয়েছি তাঁরা পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। এবং এই বিষয়গুলি তাঁরা ভালো করেই বোঝেন। আমাদের সেনাকর্তারা 'থাউজেন্টস কাটস'-এর কথা বলেন। যার অর্থ শত্রুকে ধীরে ধীরে শেষ করো। এই হামলা তারই একটি অংশ।''
এদিকে পহেলগাঁও হামলার তদন্তে এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে, ২২ এপ্রিল দুপুরে বৈসরন ভ্যালি রিসর্টে হামলা চালায় চারজন। তার মধ্যে দু’জন পাকিস্তানি। বাকি দুজন কাশ্মীরের বাসিন্দা। চারজনের স্কেচও প্রকাশ হয়েছে। এদের পথপ্রদর্শক হিসাবে আদিল ঠোকর নামের এক জঙ্গির নামও প্রকাশ করেছে তদন্তকারী সংস্থাগুলি। এর বাইরে আর কারা যুক্ত সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এনআইএ সূত্র বলছে, এই হামলার জন্য লস্করের সঙ্গে পাক সেনা এবং আইএসআই যে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে সেটার পোক্ত প্রমাণ রয়েছে। এনআইএ’র রিপোর্ট বলছে, এই হামলার নেপথ্যে অন্তত ২০ জন ওভারগ্রাউন্ড ওয়ার্কার কাজ করেছে। এই ওভারগ্রাউন্ড ওয়ার্কাররা এখনও কাশ্মীরে সক্রিয়।
