shono
Advertisement

Breaking News

Asim Munir

গাজায় পাকিস্তানি সেনা পাঠাতে চান ট্রাম্প, মার্কিন চাপে উভয় সংকটে 'বন্ধু' মুনির

ইজরায়েলের পথে হেঁটে হামাসের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরবে পাকিস্তান!
Published By: Amit Kumar DasPosted: 11:49 AM Dec 17, 2025Updated: 03:50 PM Dec 17, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'বন্ধু' ট্রাম্পের আবদার রাখতে গিয়ে বিষম খাওয়ার জোগাড় পাকিস্তানের সেনা সর্বাধিনায়ক আসিফ মুনিরের (Asim Munir)। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) গাজা শান্তি প্রস্তাবে সিলমোহর দিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ। যার ভিত্তিতে হামাসের গড়ে এবার মোতায়েন করা হবে আন্তর্জাতিক সেনাবাহিনী। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প চাইছেন গাজার মাটিতে সেনা পাঠাক পাকিস্তানও। সেই লক্ষ্যে মুনিরের উপর চাপ বাড়াচ্ছে ওয়াশিংটন। 'বন্ধু'র এই প্রস্তাব পাকিস্তান না পারছে গিলতে, না পারছে উগরাতে। কারণ, গাজায় সেনা পাঠানোর অর্থ ইজরায়েলের পথে হেঁটে হামাসের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরা। যে ইজরায়েলকে পাকিস্তান দেশের স্বীকৃতি দেয়নি, যে হামাসকে তারা 'বন্ধু' মনে করে তাঁদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরলে মুসলিম রাষ্ট্রগুলির সামনে লজ্জার শেষ থাকবে না। ওদিকে আমেরিকার অনুরোধ উপেক্ষা করাও সম্ভব নয়। ফলে 'শাঁখের করাত'-এর মতো অবস্থা তাদের।

Advertisement

সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাকিস্তানকে জানিয়েছেন রাষ্ট্রসংঘের নীতি মেনে গাজায় যে আন্তর্জাতিক সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে সেখানে পাকিস্তানের সেনাকেও যেন পাঠানো হয়। ইসলামাবাদের তরফে এই ইস্যুতে প্রকাশ্যে কিছু না জানানো হলেও মুনির কোনওভাবেই চান না সেখানে সেনা পাঠাতে। সূত্রের খবর, এই ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করতে শীঘ্রই আমেরিকা যাবেন মুনির। গত ৬ মাসের মধ্যে ট্রাম্পের সঙ্গে মুনিরের এটা তৃতীয় বৈঠক হতে চলেছে। আর সেই আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হতে চলেছে গাজা প্রসঙ্গ।

শান্তির লক্ষ্যে রাষ্ট্রসংঘের তরফে গাজায় আন্তর্জাতিক সেনা মোতায়েনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। যাদের লক্ষ্য হবে গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠা ও হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ করা। হামাস শুরু থেকেই এই প্রস্তাবের বিরোধী। স্পষ্ট ভাষায় তারা জানিয়ে দিয়েছে, কোনও মূল্যেই অস্ত্র ছাড়বে না হামাস। ফলে কূটনৈতিক মহলের আশঙ্কা, এই শান্তি রূপ নিতে পারে ভয়ংকর যুদ্ধের। এদিকে কূটনৈতিক নীতি অনুযায়ী, প্যালেস্টাইন-ইজরায়েল যুদ্ধে শুরু থেকেই ইজরায়েলের বিরুদ্ধে সরব পাকিস্তান। প্রত্যক্ষভাবে না হলেও, মুসলিম দেশ হওয়ার সুবাদে পরোক্ষে হামাসের প্রতি প্রচ্ছন্ন মদত রয়েছে শাহবাজ-মুনিরের। এই অবস্থায় ট্রাম্পের আবদার রাখতে হলে হামাসের বিরুদ্ধেই অস্ত্র ধরতে হবে পাকিস্তানকে। তা যদি হয়, সেক্ষেত্রে একমাত্র পরমাণু শক্তিধর মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে নিজ সমাজে মুখ দেখানোর জো থাকবে না পাকিস্তানের। শুধু তাই নয়, মুনিরের হামাস বিরোধী এই পদক্ষেপ দেশের অন্দরেও জ্বালাতে পারে আগুন। সে আভাস অবশ্য আগেই পেয়েছেন শাহবাজরা। যুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানের মার্কিন ঘনিষ্ঠতা ভালোভাবে নেয়নি পাক জনতা। সরকারকে হিংসাত্মক আন্দোলনের মুখেও পড়তে হয়। সব মিলিয়ে ট্রাম্পের প্রস্তাব এখন পাকিস্তানের কাছে শাঁখের করাত হয়ে উঠেছে শাহবাজ-মুনিরের কাছে।

আসলে ট্রাম্প চান গাজা সমস্যা সমাধানে এবং হামাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে কোনও মুসলিম রাষ্ট্রের সেনা সেখানে থাকুক। তাতে মুসলিম কট্টরপন্থী হামাসের উপর কিছুটা হলেও লাগাম পরানো যাবে। অন্যদিকে মুনির কোনওভাবেই চান না গাজায় তাঁরা 'বলির পাঁঠা' হোন। তবে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা এতটাই সহজ নয়। ওয়াশিংটন-ভিত্তিক আটলান্টিক কাউন্সিলের দক্ষিণ এশিয়ার সিনিয়র ফেলো মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, ''যদি পাকিস্তান এই মিশনের অংশ হতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে ট্রাম্প নিশ্চিতভাবেই ক্ষুব্ধ হবেন। যা পাকিস্তানের জন্য সমস্যার কারণ হতে পারে, কারণ পাকিস্তানে বিনিয়োগ করতে এবং নিরাপত্তা সহায়তা প্রদানে আগ্রহী ওয়াশিংটন। অর্থনীতি থেকে সামরিক এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আমেরিকাকে ছুঁয়ে থাকার লাভ ভালোই বোঝে পাকিস্তান। সেসব ভন্ডুল হলে দিন শেষে বিপদ বাড়বে পাকিস্তানের।''

ফলে অনুমান করা হচ্ছে, যে ইজরায়েলকে পাকিস্তান এখনও দেশের স্বীকৃতি দেয়নি, তাদের পাশে দাঁড়িয়ে হামাসের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলবে না পাকিস্তান। এর জন্য আফগানিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ ইস্যু খাড়া করতে পারেন মুনির। প্রয়োজনে আফগান সীমান্তে ঝিমিয়ে থাকা যুদ্ধের আগুন আরও খানিক উসকে দিতে পারে পাকিস্তান, যাতে শেষ পর্যন্ত গাজায় সেনা পাঠাতে না হয়। তবে ট্রাম্পকে বোকা বানানো এতটাও সহজ হবে না বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। ফলে বেকায়দায় পড়া মুনির-শাহবাজ শেষপর্যন্ত কী করেন সেদিকেই নজর থাকবে ওয়াকিবহাল মহলের।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • বন্ধু ট্রাম্পের আবদার রাখতে গিয়ে বিষম খাওয়ার জোগাড় পাকিস্তানের সেনা সর্বাধিনায়ক আসিফ মুনিরের।
  • ট্রাম্প চাইছেন গাজার মাটিতে সেনা পাঠাক পাকিস্তান।
  • 'বন্ধু'র এই প্রস্তাব পাকিস্তান না পারছে গিলতে, না পারছে উগরাতে।
Advertisement