সুকুমার সরকার, ঢাকা: দেড় মাস আগে অসম থেকে বানের জলে ভেসে হাতিটি পৌঁছে গিয়েছিল বাংলাদেশে। জামালপুর জেলার কয়রা গ্রামে তার যাত্রা শেষ হল।
এলাকার মানুষ আদর করে হাতিটির নাম রেখেছিল ‘বঙ্গবাহাদুর।’ মঙ্গলবার বঙ্গবাহাদুরের মৃত্যু হয়। বিকালে সেখানেই হাতিটির সমাধি দেওয়া হয়। হাতিটিকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছিল। সফল হওয়ার আগেই পৃথিবী ছাড়ল সে। হাতিটি আতঙ্কের কারণ হলেও এলাকাবাসী তাকে বিরক্ত করেননি। বরং খাবার দেওয়ার পাশাপাশি বন্যার জল থেকে রক্ষা করেছিলেন। গ্রামের মোড়ল বরকত উল্লাহ হাজি বলেন, “আমার দুই বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। তাতে আমার দুঃখ নেই। কিন্তু একদল বনকর্মী হাতিটাকে বাঁচাতে পারল না। এটাই দুঃখজনক।” তাঁর দাবি, বনকর্মীদের গাফিলতির কারণেই হাতিটা মারা গিয়েছে।
এদিকে, উপপ্রধান বন সংরক্ষক তপন কুমার দে জানান, “হাতির ভিসেরা পরীক্ষার জন্যে নমুনা সংগ্রহ করে মহাখালির বিশেষায়িত হাসপাতালে পাঠানো হবে।” হাতির মৃত্যুর কারণ জানতে মৃতদেহের ময়নাতদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি তৈরি করেছেন সরিষাবাড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
গত ২৬ জুন বানের জলে ভেসে কুড়িগ্রাম সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে আসার পর চার জেলায় চষে বেড়ায় পাঁচ টন ওজনের ওই পুরুষ হাতি। এক মাসের বেশি সময় ধরে পিছু পিছু ঘোরার পর গত ১১ অগাস্ট ট্রাঙ্কুলাইজার দিয়ে অচেতন করে ডাঙায় তোলা হয় হাতিটিকে। পায়ে শিকল পরিয়ে একটি আমগাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে শুরু হয় সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া। পর্যাপ্ত খাবার, ঘুম ও সঙ্গীহীন অবস্থায় দুর্বল হয়ে পড়া হাতিটিকে সাফারি পার্কে ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন বন বিভাগের উদ্ধারকর্মীরা। হাতিকে সরিয়ে নিতে ট্রাক ও ক্রেন ব্যবহারের কথা ভাবা হলেও কয়রা গ্রামের এক কিলোমিটারের মধ্যে রাস্তা না থাকায় তা সম্ভব ছিল না। সোমবার চড়া রোদে অসুস্থ বঙ্গবাহাদুর বাইদ্যা বিলের কাদাজলে পড়ে যায়।
