সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সিডনির বন্ডি বিচে ইহুদিদের হানুকা উৎসবে ভয়ংকর জঙ্গি হামলায় সামনে এই বিস্ফোরক তথ্য। সম্পর্কে বাবা-ছেলে দুই হামলাকারীর গাড়িতে ভয়ংকর জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের পতাকা পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, বিশ্বজুড়ে ত্রাস ছড়ানো এই জঙ্গি সংগঠনের মতাদর্শে বিশ্বাসী ছিল তারা। এমনকী গত মাসে ফিলিপিন্স সফরে গিয়েছিল দুই জঙ্গি।
মঙ্গলবার এই হামলা সম্পর্কে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ জানান, "আমাদের অনুমান ইসলামিক স্টেটের মতাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এই হামলা চালানো হয়েছে। এই মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে হিংসা ছড়ানোর এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র। গত এক দশক ধরে এরা মানুষকে কট্টরপন্থার পথে চালিত করছে।" পুলিশের তরফেও জানানো হয়েছে, হামলাকারীদের গাড়িতে আইএস-এর পতাকা ও কিছু আইইডি বিস্ফোরক পাওয়া গিয়েছে। এখানেই শেষ নয়, সিডনির পুলিশ কমিশনার মাল ল্যানসন জানান, এই দুই হামলাকারী গতমাসে ফিলিপিন্স সফরে গিয়েছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, ঠিক কী কারণে এরা ফিলিপিন্সে গিয়েছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদের ফিলিপিন্স সফরের সময় গাজায় ব্যাপক হামলা চালাচ্ছিল ইজরায়েল। মনে করা হচ্ছে, ইহুদি বিদ্বেষের বীজ আগে থেকেই ছিল এদের মনে। এই সফরে এমন কিছু ব্যক্তির সঙ্গে এদের পরিচয় হয় যারা এই হামলায় বাবা-ছেলেকে উদবুদ্ধ করে। বেশ কিছু রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, এই ফিলিপিন্স সফরে হামলাকারীরা মিলিটারি ট্রেনিং নিতে গিয়েছিল। হামলাকারী নাভিদ আহমেদ ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার গুপ্তচর বিভাগ এএসআইও-এর নজরে এসেছিল আইএস সম্পর্কিত একটি মামলায়। যদিও তখন নাভিদকে বিপজ্জনক বলে মনে করেনি তদন্তকারীরা।
উল্লেখ্য, রবিবার দুপুরে সিডনির অদূরে বিখ্যাত বন্ডি বিচে ‘হানুকা’ উৎসবে অন্তত ১০০০ জন শামিল হয়েছিলেন। উৎসব চলাকালীন দুই বন্দুকবাজ ঢুকে পড়ে সেখানে। এরপরই ভিড়ে ঠাসা ওই অঞ্চলে শুরু হয় গুলিবৃষ্টি। নিমেষে রক্তে লাল হয়ে যায় সোনালি বেলাভূমি। একে একে ১৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। শিশু, মহিলা কাউকেই রেয়াত করা হয়নি। ইহুদিদের উৎসবে হামলা চালানো দুই জঙ্গি হল সাজিদ আক্রম (৫০) ও তার পুত্র নাভিদ আক্রম (২৪)। সম্পর্কে এরা পিতা-পুত্র এবং পাক বংশোদ্ভূত। সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর থেকেই এরা অস্ট্রেলিয়া এসেছিল। অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ১৯৯৮ সালে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে বাবা এসেছিল। পরে ধাপে ধাপে তা রেসিডেন্ট ভিসা পেয়ে তারা সে দেশেই থেকে যায়। তার পুত্র নাভিদের জন্ম এখানেই। তদন্তে জানা গিয়েছে, হামলাকারী বাবা-ছেলে ‘শখের শিকারি’ বলে পরিচয় দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র জোগাড় করেছিল। লাইসেন্স পেতে ঘোরাঘুরিও করছিল। ৫০ বছরের বাবা একটি গানক্লাবের সদস্য।
