সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুধু জঙ্গি নয়, ভারতের অপারেশন সিঁদুর চরম আঘাত হানল পাকিস্তানের অর্থনীতিতেও। মঙ্গলরাতের মারণ হামলা প্রকাশ্যে আসার পর বুধবার কার্যত রক্তস্নাত হল পাকিস্তানের শেয়ার বাজার। রীতিমতো আতঙ্কিত প্রতিবেশী দেশের বিনিয়োগকারীরা। অন্যদিকে, পাকিস্তানকে দেওয়ার পর ভারতের বাজারে দেখা গেল সবুজ সংকেত।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, পাকভূমে ভারতের হামলার খবর প্রকাশ্যে আসার পর আতঙ্ক ছড়ায় পাকিস্তানের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। যার জেরে করাচি ১০০-এর সূচক এক ধাক্কায় ৬,২৭২ পয়েন্ট নিচে নামে। প্রায় ৫.৫ শতাংশ পতন ঘটেছে। মঙ্গলবার করাচির বাজারের সূচক ছিল ১,১৩,৫৬৮ পয়েন্ট। সেটাই বুধবার নেমে দাঁড়ায় ১০৭,২৯৬.৬৪তে। তবে এই পতন শুধু বুধবার নয়, ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে হামলার পর থেকে ভারতের প্রত্যাঘাতের ভয়ে লাগাতার নিম্নমুখী পাকিস্তানের শেয়ার বাজার। গত ১৫ দিনে প্রায় ৮ শতাংশ পতন দেখা গিয়েছে পাক বাজারে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রকের তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, কী কারণে দেশের বাজারে এই পতন ঘটছে তা খতিয়ে দেখে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে কাজ করছে সরকার।
তবে পাকিস্তানে রক্তক্ষরণ হলেও ভারতের বাজারে দেখা গিয়েছে সবুজ সংকেত। বুধবার ১০০ পয়েন্টের বেশী বৃদ্ধি পেয়ে সেনসেক্স পৌঁছে গিয়েছে ৮০,৭৪৬ পয়েন্টে। অন্যদিকে, ৩৪ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে নিফটি। বর্তমানে ২৪,৪১৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়ে রয়েছে নিফটির বাজার। এই ঘটনায় বিশেষজ্ঞদের দাবি, আসলে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলতে থাকা সাম্প্রতিক উত্তেজনাকে মাথায় রেখে মেপে পা ফেলছেন বিনিয়োগকারীরা। তাই দেশের সাফল্যে ধীরে হলেও উর্ধ্বমুখী ভারতের বাজার।
উল্লেখ্য, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ মৃত্যুর বদলা নিতে মঙ্গলবার গভীর রাতে 'অপারেশন সিঁদুর' (Operation Sindoor) অভিযান চালায় ভারতীয় সেনা। গভীর রাতে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯ জায়গায় জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র। এই হামলায় বাহওয়ালপুরে জইশ-ই-মহম্মদ, মুরাক্কায় লস্কর-ই-তৈবা ও হিজবুল মুজাহিদিনর সদর দপ্তর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গোটা অপারেশনের নজরদারিতে ছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে এই হামলার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন বিদেশসচিব ও সেনা। তাতে জানানো হয়েছে, পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরে ৯টি জায়গায় জঙ্গি পরিকাঠামো লক্ষ্য করে ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক’ করা হয়েছে। যে সব জায়গায় বসে ভারতে সন্ত্রাসবাদী হানার পরিকল্পনা হয়েছিল এবং নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সেখানেই ভারত আঘাত হেনেছে।
