সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিন বছর ধরে চলতে থাকা যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির তালিকা নেহাত কম নয়। রুশ হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ইউক্রেন। এহেন পরিস্থিতির মাঝেই ভরা সভায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানালেন, রুশ প্রেসিডেন্ট অত্যন্ত দয়ালু। তিনি মনে প্রাণে ইউক্রেনের সাফল্যই চান। ট্রাম্পের মুখে এমন মন্তব্য শুনে হাসি চাপতে পারলেন না ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সেই মুহূর্তে তাঁর অভিব্যক্তি রীতিমতো ভাইরাল সোশাল মিডিয়ায়।
রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে জেলেনস্কির সঙ্গে সম্প্রতি বৈঠক সেরেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। বৈঠক শেষে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে ট্রাম্প বলেন, "রাশিয়া ইউক্রেনকে একটি সফল দেশ হিসেবেই দেখতে চায়। কথাটা শুনতে অদ্ভুত লাগতে পারে, কিন্তু ইউক্রেন নিয়ে খুবই ইতিবাচক ধারনা রয়েছে ভ্লাদিমির পুতিনের। জ্বালানি সরবরাহ হোক বা বিদ্যুৎ, পুতিন চান তা যেন মানুষের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যেই পৌঁছে যাক। আমাদের আলোচনায় আজ অনেক ইতিবাচক দিক সামনে এসেছে।" ট্রাম্পের মুখে পুতিনের এমন প্রশংসা শুনে মুখে কিছু না বললেও জেলেনস্কির অভিব্যক্তি ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রথমে রীতিমতো বিস্মিত হন জেলেনস্কি। এরপর হেসে ওঠেন তিনি। তাঁর সেই অভিব্যক্তি ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়।
উল্লেখ্য, গত ৩ বছর ধরে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলতে থাকা যুদ্ধ থামাতে উঠেপড়ে লেগেছেন ট্রাম্প। তবে এতদিন সে পথে খুব একটা আশার আলো দেখতে পাননি তিনি। ট্রাম্প-জেলেনস্কির সাম্প্রতিক আলোচনার পর সে বিষয়ে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যুদ্ধবিরতির শর্তে মূলত দুটি বিষয় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রথমত, ইউক্রেনকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে হবে আমেরিকাকে। এবং দ্বিতীয়ত, রাশিয়ার দাবি মতো ডনবাস্ক অঞ্চল ছেড়ে দিতে হবে। ফ্লোরিডায় জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিল এই দুটি। বৈঠক শেষে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জানান, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে সমস্ত সমঝোতা সম্পন্ন হয়েছে। তবে ডনবাস্কের জটিলতা কাটতে এখনও বাকি। এই জট কাটলেই যুদ্ধ থামানো সম্পন্ন হবে।
মূলত এই ডনবাস্ক অঞ্চল নিয়েই মূল সমস্যা রাশিয়া ও ইউক্রেনের। দীর্ঘ দিন ধরেই ইউক্রেন ভূখণ্ডের এই অঞ্চল দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। যুদ্ধ থামানোর শর্ত হিসেবে রাশিয়া জানিয়ে দিয়েছে এই অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে ইউক্রেনকে। জেলেনস্কি এই অঞ্চল রাশিয়ার হাতে তুলে দিতে নারাজ। বৈঠক শেষে ট্রাম্প জানান, 'ওই অঞ্চল নিয়ে সমস্যার সমাধান এখনও হয়নি ঠিকই তবে আলোচনা সঠিক পথেই এগোচ্ছে। এটা অত্যন্ত জটিল একটি বিষয়। যুদ্ধবিরতির পথে যা কিছু বাধা ছিল তার ৯৫ শতাংশ সমাধান হয়ে গিয়েছে। আমরা সমাধানের খুব কাছেই রয়েছি।' ট্রাম্প আরও বলেন, "আমার মনে হয়, আমরা আলোচনার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছি। দেখি কী হয়। যদি সমাধান না হয়, তাহলে এই যুদ্ধ আরও অনেক দিন ধরে চলবে।"
