সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাদক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধে নামল ব্রাজিল সরকার। মঙ্গলবার রিও ডি জেনেইরোতে মাদক কারবারিদের ধ্বংস করতে আকাশে উড়তে দেখা গেল সেনা হেলকপ্টার, রাস্তায় নামল সাঁজোয়া গাড়ি। আততায়ীদের সঙ্গে ভয়ংকর গুলির লড়াইয়ে অন্তত ৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয়েছে ৪ পুলিশকর্তার।
জানা যাচ্ছে, ব্রাজিলের কুখ্যাত অপরাধী সংগঠন কমান্ডো ভার্মেলহো। দেশব্যাপী মাদক ও চোরাচালানের বিরাট নেটওয়ার্ক রয়েছে এদের। এই অপরাধীদের বিরুদ্ধেই মঙ্গলবার অভিযানে নামে পুলিশ। অপরাধীদের একাধিক ঘাঁটিতে ড্রোনের মাধ্যমে বোমা ফেলা হয়। চলে গুলির লড়াই। আকাশে হেলিকপ্টার থেকেও গুলি ছোড়ে সেনা। এই গ্যাংকে নির্মুল করতে মাঠে নামে ২৫০০ নিরাপত্তারক্ষী। এহেন হামলায় রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এই শহরের বাসিন্দারা। এমনকী রিও-র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশেও শোনা যায় গুলির শব্দ। বিরাট এই অভিযানের পর রিও-র রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে বহু মৃতদেহ।
অভিযানের পর এক্স হ্যান্ডেলে বার্তা দেন গভর্নর ক্লাউদিও কাস্ত্রো। তিনি লেখেন, 'আমাদের পুলিশের অপরাধীদের সঙ্গে ঠিক এমনটাই করে। এটা কোনও সাধারণ অভিযান ছিল না, মাদক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অভিযান।' অপরাধীর উপর ড্রোন হামলা চালানোর কথাও স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। এই অভিযানে ৮১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। অভিযানের পর সোশাল মিডিয়ায় একাধিক ছিবি ও ভিডিও সামনে এসেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, আকাশ থেকে ড্রোন থেকে ফেলা হচ্ছে বোমা। শহরের একাধিক জায়গায় আগুন জ্বলছে ও কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে চারপাশ। ওই অঞ্চলের সমস্ত স্কুল আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে এই ভয়ংকর অভিযানের নিন্দায় সরব হয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলি। ব্রাজিলের মানবাধিকার সংগঠনের প্রধান সিসার মুওজ বলেন, 'এই ধরনের ভয়ংকর অভিযান অনভিপ্রেত। সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। পুলিশকে অবাধ খুনের লাইসেন্স ধরানো হয়েছে সরকারের তরফে। এটা একধরনের বিপর্যয়। প্রতিটি মৃত্যুর তদন্ত হওয়া উচিত।' অবশ্য ব্রাজিলে এই ধরনের ঘটনা নতুন নয়। কয়েক দশক ধরে রিওতে এই ধরনের অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। ২০০৫ সালের মার্চ মাসে, রিওর বাইক্সাডা ফ্লুমিনেন্স অঞ্চলে পুলিশের অভিযানে মৃত্যু হয়েছিল ২৯ জনের। ২০২১ সালের মে মাসে, জ্যাকারেজিনহো ফাভেলায় ২৮ জন নিহত হন।
