সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের আপত্তি উড়িয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে বিরাট বাঁধ তৈরির কাজ শুরু করল চিন। ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি মার্কিন ডলারের এই প্রকল্পের ঘোষণা করেন চিনের প্রিমিয়ার লি কিয়াং। আগেই এই প্রকল্পের বিষয়টি জানা গিয়েছিল তবে শনিবার সরকারিভাবে প্রকল্পের ঘোষণা করল চিন। উল্লেখ্য, এই প্রকল্প নিয়ে আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খাণ্ডু।
বিরাট মাপের এই হাইড্রোপাওয়ার প্রকল্পটি বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে। ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে তৈরি হওয়া এই প্রকল্পে প্রতি বছর ৩০ হাজার কোটি কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতে পারে। তার ফলে ৩০ কোটি মানুষের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছবে। গোটা প্রকল্পে থাকবে পাঁচটি কাসকেড পাওয়ার স্টেশন। তবে এই প্রকল্পের কাজ কবে শেষ হতে পারে তা এখনও জানা যায়নি।
এই বাঁধ নিয়ে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “ইয়ারলুং সাংপোর (ব্রহ্মপুত্রের তিব্বতি নাম) উপর বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ বানাচ্ছে চিন। ওদের বিশ্বাস করা যায় না। ওরা যে কী করতে পারে কেউ জানে না। সামরিক আগ্রাসনের কথা বাদ দিলাম। আমার মনে হয় এই বাঁধের প্রকল্প কোনও সামরিক আগ্রাসনের চেয়েও ঢের বেশি উদ্বেগজনক। এই বাঁধের ফলে আমাদের অস্তিত্ব সংকট পর্যন্ত হতে পারে। এই বাঁধকে ‘জলের বোমা’ হিসাবেও ব্যবহার করতে পারে চিন।”
খাণ্ডুর কথায়, যেহেতু আন্তর্জাতিক জলবণ্টন চুক্তিতে নেই চিন, তাই এই বাঁধের অপব্যবহার করতে পারে তারা। বাঁধ তৈরি হওয়ার পর কখনও যদি চিন আচমকা জল ছেড়ে দেয় তাহলে অরুণাচলের সিয়াং একেবারে ভেসে যাবে। আবার কখনও বাঁধ দিয়ে গোটা ব্রহ্মপুত্রের জলই নিজেরা নিয়ে নিতে পারে চিন। এছাড়াও বাঁধ তৈরি হলে ভূতাত্ত্বিক কিছু সমস্যাও হতে পারে। তার জেরে অরুণাচলে ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্ভাবনাও বাড়তে পারে। এহেন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের কাছে খাণ্ডুর আবেদন, চিনের ‘ষড়যন্ত্র’ রুখতে পালটা পদক্ষেপ করা উচিত। তাঁর পরামর্শ, ভারতও পালটা বাঁধ দিক ব্রহ্মপুত্রে।
