সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জন্মহার বাড়াতে মরিয়া চিন। আর তাই কন্ডোম-সহ সব ধরনের গর্ভনিরোধক ওষুধেই বসছে ১৩ শতাংশ ভ্যাট। আর এই খবরেই সরগরম বেজিংয়ের সোশাল মিডিয়া। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এর ফলে অবাঞ্ছিত গর্ভধারণ ও ছোঁয়াচে যৌনরোগ বেড়ে যেতে পারে হু হু করে। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহেই শোনা গিয়েছিল এই নয়া কর আরোপের কথা।
প্রসঙ্গত, চিন থেকে কার্যত হারিয়ে যাচ্ছে তরুণ প্রজন্ম। তাঁর প্রভাব পড়ছে অর্থনীতি-সহ একাধিক ক্ষেত্রে। তাই নতুন প্রজন্ম গড়ে তুলতে নতুন করে পরিকল্পনা নিচ্ছে প্রশাসন। কেবলমাত্র যুগল নয়, সন্তান নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে সঙ্গীহীনদেরও। প্রশাসনের কাছে রেজিস্টার করে সন্তান দত্তক নিতে পারেন তাঁরা। তবুও জনসংখ্যা বাড়ছে না। ফলে ক্রমেই বাড়ছে উদ্বেগ। এরই মধ্যে সন্তান নেওয়ার জন্য দম্পত্তিদের উৎসাহিত করতে আর্থিক সাহায্যের পরিকল্পনাও করছে ড্রাগনের দেশ। এবার নয়া পদক্ষেপ বেজিংয়ের। আর তা নিয়েই বাড়ছে উদ্বেগ। প্রশ্ন উঠছে, জনসংখ্যা বাড়াতে গিয়ে কি সেদেশের যৌনস্বাস্থ্যে বড়সড় অবনতি ঘটতে চলেছে?
দেখা গিয়েছে, জন্ম নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে চিনে মহিলারাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে গর্ভ নিরোধক ব্যবহার করেন। যেখানে ৯ শতাংশ দম্পতি কন্ডোমের উপরে ভরসা রাখেন, সেখানে ৪৪.২ শতাংশ 'ইনট্রাইউটেরাইন ডিভাইস' অর্থাৎ জরায়ুতে প্রবেশ করানোর যন্ত্র অথবা ৩০.৫ নির্বীজকরণেই আস্থা রাখেন। অন্য একটি অংশ পিল বা অন্য পদ্ধতিতে জন্ম নিয়ন্ত্রণের পথে হাঁটেন। আবার ৪.৭ শতাংশ পুরুষ নির্বীজকরণের পথে হাঁটেন। তবে যেহেতু কন্ডোম ও অন্যান্য গর্ভ নিরোধকে কর বসানো হয়েছে, এবার যৌন সুরক্ষা কতটা বিপণ্ণ হবে তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। যদিও চিনের উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র বিজ্ঞানী ওয়াইই ফুক্সিয়ান বলছেন, গর্ভনিরোধক ওষুধে ভ্যাটই 'একমাত্র যুক্তিযুক্ত' পদ্ধতি। তিনি বলছেন, ''আগে প্রশাসন জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করত, কিন্তু এখন তারা মানুষকে আরও বেশি সন্তান নিতে উৎসাহিত করছে। স্বাভাবিক পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়ায় এই পণ্যগুলোকে সাধারণ পণ্যে পরিণত করা হবে।''
যদিও তিনি এমন বললেও বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অনেকেই কিন্তু উদ্বিগ্ন। ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কিয়ান কাই বলছেন, ''মূল্যবৃদ্ধি (কন্ডোমের) অর্থনৈতিক সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে গর্ভনিরোধক ব্যবহারের উৎসাহ কমিয়ে দিতে পারে। যা অনিচ্ছাকৃত গর্ভধারণ এবং যৌনবাহিত সংক্রমণের বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। এর ফলে একদিকে গর্ভপাতের সংখ্যা বৃদ্ধি, অন্যদিকে স্বাস্থ্যসেবা ব্যয়ও বাড়াতে পারে।''
