সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পৃথিবীর সবচেয়ে গোপন নির্বাচন পদ্ধতি। একবিন্দু খবরও নাকি ভ্যাটিকান সিটির বাইরে আলোর মুখ দেখে না। আর এর অন্যথা হলে নেমে আসে চূড়ান্ত শাস্তির খাঁড়া। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না।গত ২১ এপ্রিল পোপ ফ্রান্সিসের প্রয়াণের পর পরবর্তী পোপ বাছতে চূড়ান্ত গোপনীয়তায় বুধবার ভ্যাটিকানে শুরু হতে চলেছে নির্বাচন পর্ব।
পোপ ফ্রান্সিস। ফাইল ছবি।
মঙ্গলবার সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন নির্বাচন পর্বে অংশগ্রহণকারী ১৩৩ জন কার্ডিনাল। বুধবার ভোটপর্ব সম্পন্ন হয়ে নতুন পোপ নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত গোটা ভ্যাটিকান সিটিতে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকবে। যাতে ক্যাথলিক সমাজের এই গুরুত্বপূর্ণ খবর প্রকাশ্যে না আসে।
প্রায় ৭৫০ বছর ধরে একই পদ্ধতিতে পোপ নির্বাচন হয়ে আসছে। বলা হয়, এটাই পৃথিবীর সবচেয়ে গোপন বাছাইপর্ব। এককালে ভ্যাটিকানে এই গুরুত্বপূ্র্ণ কাজে থাকা কার্ডিনালরা বহির্জগতের সঙ্গে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতেন নতুন পোপ নির্বাচন সম্পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত। এখনকার দিনে মোবাইল, ক্যামেরা বাইরে রেখে নিজেদের ঘরে ঢুকতে হয়। ভ্যাটিকানের সান্তা মার্তা গেস্টহাউসে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা হয়। প্রত্যেক ঘরের সঙ্গে শৌচালয়, খাওয়াদাওয়ার সুবিধা রয়েছে। যাতে কার্ডিনালরা একে অপরের সঙ্গে এ বিষয়ে কোনও আলোচনা করতে না পারেন, তার জন্য এই আয়োজন। এবছর ৭০ দেশ থেকে ১৩৩ জন কার্ডিনাল পৌঁছেছেন ভ্যাটিকানে। রয়েছেন ভারতের ৪ জন, যাঁদের ভোটাধিকার রয়েছে।
ভ্যাটিকান সিটির সিস্টাইন চ্যাপেল।
জানা যাচ্ছে, ভ্যাটিকানের সিস্টাইন চ্যাপেলে বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে পরবর্তী পোপ নির্বাচন প্রক্রিয়া। কে হবেন পরবর্তী পোপ? সূত্রের খবর, ৫ থেকে ৬ জন নাকি প্রতিদ্বন্দ্বী। তাঁরা প্রত্যেকেই পরিচিত এবং জনপ্রিয়। তুল্যমূল্য বিচারে পরস্পরের মধ্যে টক্কর চরমে। তবে তাঁরা কারা, সে বিষয়ে কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। নতুন পোপ বাছাই পর্বটি বেশ দীর্ঘ। কখনও কখনও বছর পেরিয়ে গেলেও একমত হতে পারেন না কার্ডিনালরা। এবার পোপ ফ্রান্সিসের উত্তরসূরি বাছাইয়ের পদ্ধতি কতটা দীর্ঘ হবে, সেটাই বিষয়।
আরও একটি বিষয় নিয়েও আলোচনা চলছে। আর্জেন্টিনীয় পোপ ফ্রান্সিস ছিলেন উদারপন্থী। ক্যাথলিক সমাজের বহু গোঁড়ামি ভেঙেছিলেন তিনি। নতুন পোপ কি তাঁরই পদাঙ্ক অনুসরণ করবেন? নাকি ফের নিয়মের ঘেরাটোপে বাঁধা পড়বেন খ্রিস্টানরা?
