সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নির্দোষ হয়েও খুনের মামলায় মার্কিন মুলুকে ৪৩ বছর জেল খেটেছেন। আদালত তাঁকে খুনের মামলায় নির্দোষ ঘোষণা করেছে। তা সত্ত্বেও অপরাধীর তকমা থেকে মুক্তি পেলেন না ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক। এখন তাঁকে অপরাধী হিসাবে প্রত্যর্পণ করার কথা ভাবছে মার্কিন প্রশাসন। তবে প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়া মার্কিন আদালতে খারিজ হয়ে গিয়েছে।
মাত্র ৯ মাস বয়সে ভারত থেকে আমেরিকায় গিয়েছিলেন সুব্রাণ্ম্যম ভেদাম। পরিবারের সকলে তাঁকে 'সুবু' বলে ডাকে। বন্ধুকে খুনের অপরাধে ১৯৮২ সালে গ্রেপ্তার হন তিনি। তবে তার আগেই সুবুর মার্কিন নাগরিকত্বের আবেদন গৃহীত হয়ে গিয়েছিল। অর্থাৎ বৈধ মার্কিন নাগরিক হিসাবেই আমেরিকায় বসবাস করতেন সুবু। কিন্তু ১৯৮৩ সালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় তাঁকে। অভিযোগ, বন্ধু কিনসারকে খুন করেছেন সুবু। যেহেতু কিনসারের সঙ্গে সুবুকেই শেষবার দেখা গিয়েছিল, সেই প্রমাণে ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত।
দীর্ঘ ৪৩ বছর জেলে বন্দি থেকেছেন বর্তমানে ৬৪ বছর বয়সি সুবু। জেলে থেকেই পড়াশোনা করে তিনটি ডিগ্রি অর্জন করেছেন, পড়িয়েছেন সহবন্দিদেরও। চলতি বছর আগস্ট মাসে অবশ্য নতুন আশার কিরণ দেখা যায় সুবুর জীবনে। পেনসিলভেনিয়ার এক আদালত সুবুকে নির্দোষ ঘোষণা করে। সুবুর আইনজীবীরা বেশ কিছু প্রমাণ আদালতে পেশ করেন যা দীর্ঘদিন ধরে সরকারের তরফে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। সেই প্রমাণের ভিত্তিতেই নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে গত ৩ অক্টোবর জেল থেকে বেরন সুবু।
কিন্তু প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই সুবুকে গ্রেপ্তার করে অভিবাসন এবং শুল্ক দপ্তর। তাদের অভিযোগ, খুনের সঙ্গেই ড্রাগ সংক্রান্ত মামলাতেও দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন সুবু। খুনের মামলা থেকে রেহাই পেলেও এখনও ড্রাগ মামলা রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। সুবুর মার্কিন নাগরিকত্ব নিয়েও সংশয় প্রকাশ করছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। এই যাবতীয় বিষয় ঘিরেই সুবুকে ভারতে প্রত্যর্পণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। তবে প্রত্যর্পণ খারিজ করেছে আদালত। আপাতত সুবুকে বন্দি করে রাখা হয়েছে ডিটেনশন সেন্টারে। সবমিলিয়ে তুমুল হেনস্তার শিকার ওই ভারতীয় বংশোভূত বৃদ্ধ।
