সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রয়াত পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশারফ। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। রবিবার দুবাইয়ের হাসপাতালে তাঁর জীবনাবসান হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। তাঁর মরদেহ পাকিস্তানে আনা হবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। গত বছর থেকেই মুশারফের পরিবার তাঁকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা করছেন।
দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট। একাধিক সূত্রের দাবি ছিল, তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। যদিও পরিবারের তরফে এই খবরের সত্যতা স্বীকার করা হয়নি। বরং বলা হয়, তাঁর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে কাজ করছে না। গত বছর তাঁর অফিসিয়াল টুইটার হ্য়ান্ডেল থেকে জানানো হয়, আর সেরে ওঠা সম্ভব নয়।
[আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কুন্তলের নাম জড়িয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণ, সৌমিত্রকে নোটিস সায়নীর]
১৯৪৩ সালে দিল্লিতে মুশারফের জন্ম। করাচি ও তুরস্কের ইস্তানবুলে শৈশব কেটেছে তাঁর। পরে লাহোরের ফরমান ক্রিশ্চিয়ান কলেজে অঙ্ক নিয়ে ভরতি হলেও পরিবারের অমতে পাকিস্তান মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে যোগ দেন ১৯৬১ সালে। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। নয়ের দশকে মেজর-জেনারেল মুশারফ পদাতিক ডিভিশনের অধিনায়ক এবং পাক সেনাবাহিনীর কমান্ডো বাহিনী ‘স্পেশ্যাল সার্ভিসেস গ্রুপ’ এর প্রধান হন। পরে সেনাবাহিনী সদর দপ্তরে ডেপুটি মিলিটারি সেক্রেটারি এবং ডাইরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশন্স ডাইরেক্টরেট হয়েছিলেন।
১৯৯৮ সালের অক্টোবর মাসে পারভেজ মুশাররফ লেফটেন্যান্ট-জেনারেল থেকে পূর্ণ জেনারেলে উন্নীত হন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ তাঁকে জেনারেল পদে উন্নীত করেন। সেইসময় পারভেজ সেনাবাহিনী প্রধান এবং চেয়ারম্যান অব দ্য জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির দায়িত্ব পেয়েছিলেন। অভিযোগ, ১৯৯৯ সালে ভারতে হামলার মূল পরিকল্পনা করেছিলেন পারভেজই, যা পরে কার্গিল যুদ্ধতে পরিণত হয়। কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিবাদ থাকায় সামরিক বাহিনী থেকে মুশারফকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পালটা সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে শরিফকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দেন মুশারফ। শরিফকে প্রথমে গৃহবন্দি ও পরে রাওয়ালপিন্ডি সেন্ট্রাল জেলে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু এরপর পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে।
[আরও পড়ুন: নন্দীগ্রাম ছেড়ে কাঁথিতে শুভেন্দু, লোকসভা ভোটের জন্য তৈরি বিজেপির ব্লুপ্রিন্ট!]
দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কার্যকলাপ ও বেআইনিভাবে জরুরি অবস্থা কার্যকর করা নিয়ে ২০১৩ সালে মুশারফের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তৎকালীন সরকার। শুনানি শেষে ২০১৪ সালের মার্চ মাসে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। যদিও পরে সেই সাজা মাফ করে দেওয়া হয়। তবে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন ও অন্যান্য আইনি জটিলতায় সাজা ঘোষণা ক্রমে পিছিয়ে যায়। এহেন পরিস্থিতিতে ২০১৬ সালে দেশ ছাড়েন প্রাক্তন পাক সেনাপ্রধান।