সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গোটা বিশ্বের সমীহ আদায় করে নিয়েছে চিনের নৌবহর। সম্প্রতি মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরই জানিয়েছিল, চিনের নৌসেনাই পৃথিবীর মধ্যে সর্ববৃহৎ! সব মিলিয়ে ৩৭০টি রণতরী রয়েছে বেজিংয়ের। ২০৩০ সালের মধ্যে সেই সংখ্যা বেড়ে ৪৩৫ হতে চলেছে। এর মধ্যে সাবমেরিন তথা ডুবোডাহাজের সংখ্যা ৬০! অথচ এর অর্ধেকের কম সাবমেরিন নিয়েই জাপান কিন্তু উদ্বেগে রেখেছে চিনকে (Japan-China Tensions)। কীভাবে?
উল্লেখ্য, গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেক্স ২০২৫ অনুসারে জাপানের কাছে রয়েছে মাত্র ২৪টি সাবমেরিন। যা চিনের সাবমেরিনের সংখ্যায় অনেক কম। তাছাড়া, জাপানের কোনও সাবমেরিনই পারমাণবিক শক্তিচালিত নয়। এদিকে চিনের ১২টি পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন রয়েছে। তাহলে কী করে এগিয়ে গেল জাপান? আসলে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি নেভির সাবমেরিনগুলির তুলনায় প্রযুক্তিগতভাবে অনেক বেশি উন্নত জাপানের মেরিটাইম সেলফ ডিফেন্স ফোর্সের সাবমেরিনগুলি। জাপানের সোরয়ু (ডিজেল চালিত) ও নতুন ধরনের ওরি গোত্রীয় ডুবোজাহাজগুলি উন্নত সেন্সরযুক্ত। বিশেষ প্রযুক্তির বলে দীর্ঘ সময় জলের নিচে থাকতে সক্ষম। এয়ার-ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রোপালশনের সাহায্যে শান্ত থাকতে পারে। ফলে আত্মগোপন করে থাকাটা সহজ হয়ে যায়।
এদিকে ভূ-কৌশলগত অবস্থানও একটা দিক। জাপান চিনের উপকূলের খুব কাছে সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জ এবং তাইওয়ান প্রণালীর কাছে অবস্থিত হওয়ায় এই এলাকায় জাপানি সাবমেরিনগুলির উপস্থিতি চীনের নৌবহরের স্বাভাবিক কার্যকলাপে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। তাই চিনকে বাড়তি সতর্ক থাকতেই হয়। সংক্ষেপে, জাপানি সাবমেরিনগুলি নিঃসন্দেহে চিনের জন্য বিরাট 'মাথাব্যথা' হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
এদিকে সম্প্রতি চিন-জাপান দুই দেশের মধ্যে নতুন করে সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি মসনদে বসার পর মনে করা হয়েছিল, হয়তো চিনের সঙ্গে দীর্ঘকালীন সম্পর্ক এবার জুড়বে। কিন্তু অচিরেই পরিস্থিতি ফের খারাপ হতে চলেছে বলেই আশঙ্কা। ক্রমেই পারদ চড়ছে চিন-জাপানের মধ্যে। বেজিং ইতিমধ্যেই হুঁশিয়ারি দিয়েছে ‘উদিত সূর্যের দেশ’-কে। সব মিলিয়ে দুই দেশের মধ্যে ফের রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
