স্টাফ রিপোর্টার: ইন্দোনেশিয়ার সেনাসর্বাধিনায়ক জেনারেল অগাস সুবিয়ান্তোর মুখোমুখি ভারতের সেনাসর্বাধিনায়ক জেনারেল অনিল চৌহান। জাকার্তায় চলল দু’দেশের মধ্যে সামরিক চুক্তি, মত বিনিময়, গুরুগম্ভীর বৈঠক। আলোচনা শেষ করেই সামরিক পোশাক বদলে ফেললেন দু'জনে। ততক্ষণে এসে গিয়েছেন ‘তৃতীয়’ জন। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিস্ময়কর এক বাইক গ্যালারিতে পৌঁছে গেলেন তাঁরা।
ভারত ও ইন্দোনেশিয়া – দু’দেশের সেনা সর্বাধিনায়কেরই ‘প্রিয় বন্ধু’ এই তৃতীয় ব্যক্তি। কে তিনি? কাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতের সেনা সর্বাধিনায়ককে তাঁর নিজের বাইকের সংগ্রহশালা ঘুরিয়ে দেখালেন অগাস সুবিয়ান্তো?
তাঁর নাম প্রসূন মুখোপাধ্যায়। ইউনিভার্সাল সাক্সেস এন্টারপ্রাইজেস গ্রুপের চেয়ারম্যান। ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুরের অন্যতম প্রভাবশালী শিল্পপতি এই বঙ্গসন্তান হলেন ভারতের বর্তমান সেনাসর্বাধিনায়কের স্কুলের বন্ধু। দু’জনের শৈশব-কৈশোর কেটেছে এক বেঞ্চে। দু’জনেই আজ কৃতী, ভয়ানক ব্যস্ত। তাই জেনারেল অনিলের ইন্দোনেশিয়া সফরের কথা শুনেই সব কাজ ফেলে আড্ডার আয়োজন করে রেখেছিলেন প্রসূন।
অনিল-প্রসূন ঠিক কতটা ঘনিষ্ঠ বন্ধু তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল অনিলের মেয়ের বিয়েতে। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আপ্যায়নের গুরুদায়িত্ব প্রসূনের কাঁধে সঁপে নিশ্চিন্তে ছিলেন জেনারেল অনিল চৌহান। আবার ইডেনে ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে এলে প্রসূনের বক্স ছাড়া আর অন্য কোত্থাও যান না অনিল।
ঘটনাক্রমে ইন্দোনেশিয়ার সেনাসর্বাধিয়ানক সুবিয়ান্তোও প্রসূন মুখোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ। ইন্দোনেশিয়া সরকারের উচ্চ বৃত্তে অগাধ যাতায়াত এই ‘সেলফ মেড’ বাঙালি শিল্পপতির। সুবিয়ান্তোর সেই আশ্চর্য মোটরবাইক সংগ্রহশালার কথা অনিলকে আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন প্রসূন। সুবিয়ান্তোও অনিল-প্রসূনকে তাঁর সংগ্রহে থাকা ঐতিহাসিক ৫০টি মডেলের বাইক দেখান তাঁদের। বাইকে বসে খোশ মেজাজে গল্পও করেন তাঁরা।
সেনা পোশাক পরিহিত সেনাসর্বাধিনায়কদের গম্ভীর ছবি দেখেই অভ্যস্ত থাকে দেশের মানুষ। বাঙালি সন্তানের উৎসাহে তাঁদের একান্ত আড্ডায় হাসিমুখে পোজ দেওয়া রঙিন মুহূর্তের ছবি দেখতে মন্দ লাগে না। তবে সত্যি জেনে অবাক লাগবে, জেনারেল সুবিয়ান্তোর শখের এই বাইক কালেকশনের কথা সে দেশের আম আদমি জানে না। প্রসূনবাবু উদ্যোগ না নিলে হয়তো মিস করতেন জেনারেল অনিল চৌহানও।
