সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একদিকে গাজায় খাদ্যের তীব্র আকাল, অন্যদিকে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ছেলের বিলাসবহুল বিয়ের পরিকল্পনা! এই মুহূর্তে এই বৈপরীত্য নিয়েই চর্চা তুঙ্গে ইজরায়েলে। আগামী ১৬ জুন বসতে চলেছে ওই বিয়ের আসর। ইতিমধ্যেই জমকালো এক প্রি-ওয়েডিং সেরেমনিরও আয়োজন করা হয়েছে। একদিকে যেখানে গাজায় বুভুক্ষু মানুষের অসহায়তা, সেখানে নেতানিয়াহুর এই বিলাসব্যসন ঘিরে তীব্র সমালোচনার সুর শোনা গিয়েছে সমালোচকদের কণ্ঠে।
বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বড় ছেলে ইয়ের নেতানিয়াহু যথেষ্ট পরিচিত মুখ খুললেও অপর পুত্র আভনের নেতানিয়াহু ততটা পরিচিত নয়। সঙ্গিনী অমিত ইয়ার্দেনির সঙ্গে তাঁর বাগদান সম্পন্ন হয়েছে গত নভেম্বরে। এবার গাঁটছড়া বাঁধতে চলেছেন দু'জনে। আর সেই বিয়ে নিয়ে উত্তেজনার পারদ চড়ছে ইজরায়েলের ভিআইপি মহলে। প্রি-ওয়েডিং সেরেমনিতেও বহু মানুষ আমন্ত্রিত ছিলেন। যে ছবি সামনে এসেছে, তা থেকে পরিষ্কার কেমন জমকালো ছিল আয়োজন।
গত আড়াই মাস ধরে গাজা অবরুদ্ধ করে অভিযান চালাচ্ছিল ইহুদি সেনা। গুরুতর এই পরিস্থিতিতে বিশ্বের চাপের মুখে পড়ে গাজায় ত্রাণ পাঠানোর অনুমতি দিয়েছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সেইমতো সেখানে বিভিন্ন দেশ থেকে পাঠানো হচ্ছে ত্রাণ সামগ্রী। তবে দুর্ভিক্ষপীড়িত গাজায় ত্রাণ পাঠাতে গিয়ে রীতিমতো সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে সাহায্যকারী সংগঠনগুলিকে। খাবার নিতে আসা মানুষের ভিড়ে এলোপাথাড়ি গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে ইজরায়েলের সেনার বিরুদ্ধে। পাশাপাশি সম্প্রতি প্রকাশিত এক রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে গাজার সাম্প্রতিক করুণ প্রতিচ্ছবি। দাবি করা হয়েছে, গাজার ২০ লক্ষ বাসিন্দার মধ্যে বেশিরভাগই ভয়ংকর অপুষ্টির শিকার। এই আবহে নেতানিয়াহুর ছেলের বিয়ের আড়ম্বরের গুঞ্জন ঘিরে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
তবে বিরুদ্ধমতও পোষণ করছেন অনেকে। তাঁদের দাবি, দেশের যে কোনও সাধারণ নাগরিকের মতো আভনেরেরও অধিকার রয়েছে বিয়েতে ইচ্ছেমতো খরচ করার। কেননা তিনি প্রধানমন্ত্রী নন, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে। কিন্তু উলটো মত হল, তিনি কার্যতই দেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য। সেক্ষেত্রে আরও বেশি সংবেদনশীলতা তাঁর থেকে প্রত্যাশিত। ইতিমধ্যেই বিয়ের দিন বিয়েবাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অনেকেই। তবে এটাও পরিষ্কার করা হয়েছে, বিয়ে তাঁরা ভণ্ডুল করতে চান না। এবং বিয়ের বিরুদ্ধেও তাঁরা নন। কিন্তু যেখানে গাজার এই পরিস্থিতি, এবং ইজরায়েলি সেনার বড় অংশই দিনের পর দিন যুদ্ধে শামিল হয়েছেন, সেখানে এমন বিলাসবহুল বিয়ে যে আদপে এই পরিস্থিতিতেই অবজ্ঞা করা সেটাই আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট করতে চান তাঁরা।
