সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুক্রবারই ২৬/১১ মুম্বই হামলার মূলচক্রী লস্কর-ই-তইবার শীর্ষ কমান্ডার জাকিউর রহমান লাকভিকে (Zakiur Rehman Lakhvi) কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে পাকিস্তানের (Pakistan) একটি আদালত। এবার এই সাজা ঘোষণাকে ‘প্রহসন’ বলে কটাক্ষ করল ভারত। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব ইসলামাবাদকে খোঁচা মেরে জানিয়েছেন, এসবই FATF -এর (ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স) ধূসর তালিকা থেকে বেরনোর চেষ্টা।
তাঁর কথায়, ‘‘বোঝাই যাচ্ছে, APG-র আগামি বৈঠক ও ফেব্রুয়ারিতে FATF-এর বৈঠকের আগে ভাবমূর্তি শুধরাতেই এমন পদক্ষেপ। বৈঠকের আগে এই ধরনের প্রহসনমূলক পদক্ষেপ পাকিস্তানের অভ্যেসে পরিণত হয়েছে।’’ তাঁর আরজি, পাকিস্তান যথাযথভাবে সন্ত্রাস দমনের চেষ্টা করছে কি না তা খতিয়ে দেখা দরকার।
[আরও পড়ুন: যুদ্ধের ইঙ্গিত! ফের উত্তর কোরিয়ার সামরিক শক্তি বাড়ানোর উদ্যোগ কিম জং উনের]
পাকিস্তান অধিকৃত পাঞ্জাবের সন্ত্রাসদমন দপ্তর জাকিউর রহমান লাকভির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে আর্থিক মদত দেওয়ার মামলা করেছিল। অভিযোগ ছিল সন্ত্রাসের জন্য গঠিত তহবিলের অর্থে জঙ্গিদের স্বাস্থ্য কেন্দ্র চালানোর।। তার ভিত্তিতে গত ২ জানুয়ারি লাহোর থেকে লাকভিকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। তার ঠিক ৬ দিনের মধ্যেই সাজা ঘোষণাও করা হল। তবে পাকিস্তানের তরফে পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে, কোনও জঙ্গি হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য শাস্তি পায়নি লাকভি। সন্ত্রাসে আর্থিক মদত সংক্রান্ত তিনটি পৃথক মামলায় মোট পনেরো বছরের সাজা ঘোষণা করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। যদিও এই তিন মামলায় একই সঙ্গে জেল খাটার কারণে পাঁচ বছরের বেশি বন্দি থাকতে হবে না লাকভিকে। সেই সঙ্গে ৩ লক্ষ টাকার জরিমানাও করা হয়েছে তাকে। যার অনাদায়ে আরও দেড় বছর অবশ্য জেলে থাকতে হতে পারে কুখ্যাত এই জঙ্গি নেতাকে।
কেবল লাকভিই নয়, বৃহস্পতিবার ভারতে একাধিক জঙ্গি হামলার মূল চক্রী সন্ত্রাসবাদী মাসুদ আজহারের (Masood Azhar) বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, ধূসর তালিকা থেকে বেরতেই এমন সব পদক্ষেপ করছে পাকিস্তান। ২০১৮ সালের জুন মাসে ধূসর তালিকাভুক্ত করা হয় ইমরান খানের দেশকে। গত নভেম্বরে শীর্ষ পাক গোয়েন্দা সংস্থা FIA দেশের মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গিদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছিল। তখন থেকেই বোঝা গিয়েছিল, ধূসর তালিকার ছায়া থেকে বেরতে হলে সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে যে কঠোর পদক্ষেপ নিতেই হবে, সেটা পরিষ্কার বুঝতে পেরেছে ইসলামাবাদ। তবে এর পিছনে তাদের কতটা সদিচ্ছা রয়েছে আর কতটা কৌশল, তা নিয়ে সন্দিহান ওয়াকিবহাল মহল।