সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বালোচিস্তানে (Balochistan) দাউদাউ করে জ্বলছে বিদ্রোহের আগুন। স্বাধীনতার দাবিতে পাকিস্তানি ফৌজের বিরুদ্ধে তুমুল লড়াই শুরু করেছে বালোচ বিদ্রোহীরা। এহেন পরিস্থিতিতে পাক সেনাবাহিনীর দু’টি ঘাঁটিতে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে স্বাধীনতাকামীরা। সংঘর্ষে এক পাক সেনা-সহ মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের।
[আরও পড়ুন: গালওয়ানে ভারতীয় সেনার তাড়া খেয়ে জলে ডুবে মৃত্যু হয় ৩৮ চিনা সেনার, দাবি রিপোর্টে]
বালোচ বিদ্রোহীদের হামলার ঘটনায় বুধবার এক বিবৃতি জারি করে পাক সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বালোচিস্তানে প্রদেশের পাঞ্জগুর জেলায় ফৌজের দু’টি সেনাচৌকিতে হামলা চালায় ‘সন্ত্রাসবাদীরা’। সংঘর্ষে চার হামলাকারীর মৃত্যু হয়েছে। প্রাণ হারিয়েছেন এক সৈনিক। সফলভাবেই ‘জঙ্গি’দের আক্রমণ প্রতিহত করা হয়েছে। এদিকে, নিজেদের টুইটার হ্যান্ডেলে হামলার দায় স্বীকার করেছে বিদ্রোহী সংগঠন ‘বালোচিস্তান ন্যাশনাল আর্মি’। সূত্রের খবর, গত মাসেই ‘বালোচিস্তান রিপাবলিকান আর্মি’ ও ‘ইউনাইটেড বালোচ আর্মি’ এক ছাতার তলায় আসায় নতুন সংগঠনতি তৈরি হয়েছে।
পাকিস্তানি শাসনের শৃঙ্খল ভেঙে ফেলতে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালাচ্ছে বালোচরা। পালটা গুমখুন, হত্যা ও ধর্ষণের মতো অমানুষিক অত্যাচার চালিয়ে বিদ্রোহের আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে ইসলামাবাদ। বিশেষ করে চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর তৈরি হওয়ার পর থেকেই আরও অশান্ত হয়ে উঠেছে বালোচিস্তান। অভিযোগ, খনিজ সমৃদ্ধ প্রদেশটিকে কার্যত লুট করছে ইমরান খানের প্রশাসন। প্রতিদানে বালোচ জনতা পেয়েছে শুধু নির্যাতন ও দারিদ্র। গত সপ্তাহে, বালোচ বিদ্রোহীদের হামলায় মৃত্যু হয় অন্তত দশজন পাক সেনার।
উল্লেখ্য, ২০১৫-তে স্বাক্ষর হওয়া মউয়ের ভিত্তিতে চিন-পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক করিডর বা সিপিইসি নির্মাণকার্য শুরু হয়েছে৷ চিনের প্রস্তাবিত ‘ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড’ নীতির উপর ভিত্তি করে, তাদের অর্থ সাহায্যেই এই করিডর তৈরি হচ্ছে৷ পাকিস্তানের গদর পোর্ট থেকে চিনের শিনজিং প্রদেশ পর্যন্ত মোট ২,০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পথটি তৈরি করা হচ্ছে৷ এই করিডর নিয়ে প্রথম থেকেই বিক্ষোভ প্রদর্শন করে আসছেন বালোচিস্তান-সহ গিলগিট-বালতিস্তান ও পিওকে-র নাগরিকরা৷ অভিযোগ, পেশিশক্তির জোরে তাঁদের বাসভূমি কেড়ে নিয়ে এই করিডর তৈরি করছে পাকিস্তান৷ যাতে পূর্ণ মদত দিচ্ছে চিন৷ এই অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরেই পাক প্রশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালাচ্ছেন বালোচ নাগরিকরা এবং তাঁদের উপর অকথ্য অত্যাচার চালাচ্ছে পাক সেনা৷