shono
Advertisement

‘করোনা আমাদের দিয়েছে একাকীত্ব, বিষণ্ণতা’, বলছেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বঙ্গকন্যা

সময়মতো সাবধান হননি অস্ট্রেলিয়াবাসী। The post ‘করোনা আমাদের দিয়েছে একাকীত্ব, বিষণ্ণতা’, বলছেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বঙ্গকন্যা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 05:07 PM Mar 24, 2020Updated: 05:07 PM Mar 24, 2020

করোনা কামড় তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। তবু হুঁশ ফিরছে কই? ইটালি অবহেলার মাশুল গুনেছে। তাকে দেখে কেউ কেউ শিক্ষা নিলেও নেয়নি অনেকেই। তারই একটা অস্ট্রেলিয়া। দিনে দিনে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তা সত্ত্বেও মানুষজন মজে থেকেছেন আড্ডা, হই হুল্লোড়ে। প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। লকডাউন। তবে তা আবার নতুন সমস্যা তৈরি করেছে। অস্ট্রেলিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালে লিখলেন নিউ সাউথ ওয়েলসের বাসিন্দা শ্রীতমা নায়েক।

Advertisement

এক বছর ধরে আমরা মানে অস্ট্রেলিয়াবাসী অনেক ঝড়ঝাপ্টার মধ্যে রয়েছি। দাবানল আমাদের কত ক্ষতি করেছে, মনে ভয় ঢুকিয়েছে। ২০১৯ এর শেষ আর ২০২০এর শুরুটা বুঝতেই পারলাম না, কখন গেল, কখন এল। দাবানলের জন্য বিখ্যাত সব অনুষ্ঠান বাতিল হয়ে গেছে। সে যাক। এবার আবার নতুন বিপদ – করোনা ভাইরাস। এটা অবশ্য আমাদের একার বিপদ না। গোটা বিশ্বকেই ভয় ধরিয়ে দিয়েছে এই নতুন রোগজীবাণু।

[আরও পড়ুন: আইসোলেশনে বয়স্করা, খাবার বাড়িতে পৌঁছে দিতে এগিয়ে এল মার্কিন শিখ সম্প্রদায়]

চিন থেকে ইউরোপে করোনা ছড়িয়ে পড়ার সময়েই তার কোপে পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। এটা যে ভবিষ্যতে এমন বিপজ্জনক আকার নেবে, তা না বুঝে সকলেই হেলাফেলা করেছিলাম। দেশে করোনা পজিটিভের সংখ্যা বাড়ছিল। তবু আমাদের উচ্ছল জীবনের গতিতে লাগাম পরাইনি। মৃত্যুর খবর পাচ্ছিলাম নানা প্রান্ত থেকে। শোক হয়নি। একদিন অফিস জানিয়ে দিল, এবার থেকে আমাদের ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’। আরও আনন্দ হলো। বাড়িতে বসে কাজ করব, আর কাজ শেষ হলেই আউটিং।

আসলে আমরা তো এতেই অভ্যস্ত ছিলাম। উইকেন্ডে পার্টি, নাইট ক্লাব – এটাই রোজনামচা। তাই আমরা করোনা সতর্কতাকে পাত্তা দিইনি। ভেবেছিলাম, নিজেদের অফুরন্ত প্রাণশক্তি দিয়ে সব রুখে দেব। আর সেখানেই লুকিয়ে ছিল বিপদ। যত বেশি মেলামেশা, ততই করোনা সংক্রমণের চান্স বেশি। এই সহজ কথাটা বুঝলে আজ হয়ত এই দিন দেখতে হতো না। রোগ ছড়িয়ে পড়া রুখতে সোশ্যালি আইসোলেটেড থাকুন, এই বার্তায় কান না দিয়ে গত শুক্রবারও এ দেশের বিখ্যাত বন্ডি বিচে ভিড় করেছিলেন বহু মানুষ। তারপরই প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করে লকডাউন করে দেন। এখন আমরা প্রকৃতভাবেই সামাজিক বিচ্ছিন্নতার মধ্যে আছি। আমি নিজে শুধু একদিন গ্রসারি কিনতে সামনের শপে গিয়েছিলাম। তাছাড়া ঘরবন্দি।

গত সপ্তাহে বন্ডি বিচের ভিড়

কিন্তু আচমকা এভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া মোটেই আমাদের মনে ভাল কোনও প্রভাব ফেলেনি। ঘর থেকে না বেরিয়ে, বন্ধুদের মুখ না দেখে, একটু ক্লাবে না গিয়ে আমরা কেমন বিষণ্ণ হয়ে পড়েছি। বিশেষত বয়স্করা। এমনিই তাঁরা একাকী। সমবয়সী বন্ধুরাই এঁদের জীবনের শেষ সম্বল। তাই ওঁদের বন্ধুত্ব যেমন গভীর, তেমনই জীবনের অক্সিজেন প্রায়। তাই কোয়ারেন্টাইন পিরিয়ড তাঁদের কাছে অসহ্য।

[আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় বিশ্বকে পথ দেখাবে ভারত, সার্টিফিকেট WHO কর্তার]

করোনা আমাদের কতটা ছুঁয়েছে, জানি না। কিন্তু বিষণ্ণতা যে মানসিক সমস্যা তৈরি করেছে, তা বেশ টের পাচ্ছি সবাই। এক বা দেড় বছরের মধ্যে হয়ত করোনার ওষুধ হয়ত খুঁজে পাওয়া যাবে। কিন্তু এই মানসিক সমস্যা উপশমের কোনো ওষুধ মিলবে কি? মনে হয় না। শয়ে শয়ে প্রাণ কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি, এও করোনারই এক ‘দান’।

The post ‘করোনা আমাদের দিয়েছে একাকীত্ব, বিষণ্ণতা’, বলছেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বঙ্গকন্যা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement