সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনালাপ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের। জানা যাচ্ছে, ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা ও ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে দুই রাষ্ট্র প্রধানের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এখনও যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ইজরায়েল ও রাশিয়া। হামাস ইস্যুতে ট্রাম্পের উপর রীতিমতো ক্ষুব্ধ নেতানিয়াহু। এই আবহে দুই রাষ্ট্র প্রধানের এই ফোনালাপ বিশ্ব কূটনীতির হিসেব-নিকেশ উলটে পালটে দিতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
ফোনালাপের বিষয়ে ক্রেমলিনের তরফে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট পুতিন প্যালেস্টাইন সমস্যার বিষয়ে বিশদে কথা বলেছেন নেতানিয়াহুর সঙ্গে। যেখানে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত আইনি পদ্ধতিতে প্য্যালেস্টাইন সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের পক্ষে সমর্থন জানানো হয়েছে। অন্যদিকে আঞ্চলিক সমস্যা নিয়েও কথা বলেছেন দুই রাষ্ট্রনেতা। যেখানে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ও সিরিয়া নিয়েও দীর্ঘ কথা হয় দু'জনের মধ্যে। জানা যাচ্ছে, ফোনে পুতিনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন নেতানিয়াহু।
তবে দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে ফোনালাপ এমন সময়ে হল যখন গোটা বিশ্ব যুদ্ধ থামানোর জন্য নেতানিয়াহু ও পুতিনের উপর চাপ বাড়িয়ে চলেছে। মাঠে নেমেছেন খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হামাস ও ইজরায়েলের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। ট্রাম্পের প্রস্তাবিত গাজা শান্তি প্রস্তাবে হামাস ও ইজরায়েল ইতিবাচক সাড়া দিলেও তা এখনও কার্যকর হওয়া থেকে বহু দূরে। এহেন পরিস্থিতির মাঝে এই ফোনালাপের নেপথ্যে অন্য কূটনৈতিক অঙ্কও সামনে আসছে।
উল্লেখ্য, মার্কিন ঘনিষ্ঠ ইজরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকলেও কোনওভাবেই রাশিয়ার 'বন্ধু দেশ' বলা যায় না ইজরায়েলকে। অন্যদিকে, ইরানের সঙ্গে যথেষ্ট হৃদ্যতা রয়েছে রাশিয়ার। এই ইরানই মধ্যপ্রাচ্যে হাউথি, হেজবোল্লা ও হামাসের মদতদাতা বলে মনে করা হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সে অঙ্ক বদলে গিয়েছে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। ইজরায়েল চায় গাজার মাটি থেকে হামাস নামের 'বিষবৃক্ষ' শিকড় সমেত উপড়ে ফেলতে। তবে ট্রাম্প ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন যুদ্ধবিরতি করাতে। যার জন্য নেতানিয়াহুকে গালিগালাজ করতেও পিছপা হচ্ছেন না তিনি। মনে করা হচ্ছে, এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ইজরায়েলের ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছেন পুতিন। তাতে মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক জটিলতা একদিকে যেমন রাশিয়ার পক্ষে আসবে, অন্যদিকে তেমনই ট্রাম্পকেও যোগ্য জবাব দেওয়া যাবে।
