সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘ইস্টার’ উপলক্ষে ইউক্রেনে ২৪ ঘণ্টা সমস্ত সামরিক অভিযান বন্ধের ঘোষণা করেছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কিন্তু উৎসবেও তিনি নিজের কথা রাখছেন না। রাতভোর নানাভাবে ইউক্রেনে আঘাত হানার চেষ্টা করেছে রুশ ফৌজ। এমনটাই অভিযোগ ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির।
গতকাল শনিবার পুতিন ঘোষণা করেন, “মানবিক কারণে শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে আটটা (মস্কোর সময় সন্ধ্যা ৬টা) থেকে রোববার (২০ এপ্রিল) মধ্যরাত পর্যন্ত রাশিয়ার পক্ষে ইস্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হল। এই সময়ে রাশিয়া যাবতীয় সামরিক অভিযান বন্ধ রাখবে।” ২৪ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে রাশিয়ার সেনাপ্রধান ভ্যালারি গেরাসিমভকে নির্দেশও দিয়েছিলেন পুতিন। কিন্তু রবিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির অভিযোগ, "ইস্টারে রাশিয়ার সেনাবাহিনী শুধুমাত্র যুদ্ধবিরতির ধারণা তৈরি করার চেষ্টা করছে। ওরা ইউক্রেনের অগ্রগতি রোখা আর এবং ক্ষতিসাধনের প্রচেষ্টা থেকে সরে আসেনি। রাতভর রুশ সেনা ফ্রন্টলাইনে হামলার চেষ্টা করছে।"
প্রসঙ্গত, তিনবছর ধরে ভয়ংকর যুদ্ধ চলছে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে। একে অপরকে ঝাঁজরা করে দিচ্ছে দুই দেশ। এই সংঘাতের শুরুটা হয়েছিল ২০১৪ সালে। ক্রাইমিয়া দখল করে রুশ ফৌজ। এই ভূখণ্ডকে নিজেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবেই দাবি করে কিয়েভ। নতুন খবর হল, এই ক্রাইমিয়াকেই রাশিয়ার অংশ হিসাবে মান্যতা দিতে পারে আমেরিকা! জল্পনা, এই পদ্ধতিতেই হয়তো যুদ্ধ থামানোর ‘শেষ’ চেষ্টা করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিকে এই সংবাদ প্রকাশ্যে আসতেই রক্তচাপ বেড়েছে ইউক্রেনের। তারাও একচুল জমি মস্কোর হাতে তুলে দিতে রাজি নয়।
২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া দখল করে রাশিয়া। তারপর থেকেই সেখানে মস্কো সমর্থিত প্রশাসন কাজ করছে। উপদ্বীপটিতে রুশ সেনাঘাঁটিকে বারবার নিশানা করে হামলা চালিয়েছে ভলোদিমির জেলেনস্কির বাহিনী। পালটা আঘাত হেনেছে মস্কোও। যুদ্ধ থামাতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অন্যতম শর্তই হল, এই উপদ্বীপটিকে রাশিয়ার অংশ হিসাবে ঘোষণা করতে হবে। সূত্রের খবর, এবার সেই পথেই হাঁটতে চলেছে আমেরিকা। শান্তি চুক্তির আলোচনায় ট্রাম্প ঘোষণা করতে পারেন ক্রাইমিয়া রাশিয়ারই। কিন্তু জেলেনস্কি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, শিয়াকে কোনও জমি ছেড়ে দিয়ে মাথানত করা হবে না। ফলে দু’দেশের দর কষাকষি আরও দীর্ঘ হলে হাত তুলে নেবে আমেরিকা। তাই পরিস্থিতি আরও জটিল থেকে জটিলতর হয় কিনা তা নিয়েই এখন উদ্বেগ বাড়ছে।
