shono
Advertisement

‘সামাজিক দূরত্ব’কথায় আপত্তি বিশেষজ্ঞদের একাংশের, যুক্তি মেনে শব্দটি বদলাচ্ছে WHO

নতুন শব্দবন্ধ হোক - 'শারীরিক দূরত্ব'। The post ‘সামাজিক দূরত্ব’ কথায় আপত্তি বিশেষজ্ঞদের একাংশের, যুক্তি মেনে শব্দটি বদলাচ্ছে WHO appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 03:58 PM Mar 27, 2020Updated: 03:58 PM Mar 27, 2020

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা সংক্রমণ রুখতে এখন বিশ্বজুড়ে একটাই দাওয়াই – সামাজিক দূরত্ব (Social Distance) বজায় রাখা। কিন্তু এই শব্দবন্ধে আপত্তি জানাচ্ছেন জনসংযোগ এবং মনস্তাত্ত্বিক চর্চার সঙ্গে যুক্ত মানুষজন। তাঁদের মতে, সামাজিক দূরত্ব বললে যতটা দূরে সরিয়ে দেওয়ার ভাব ফুটে ওঠে, তা অনেকের মনেই ধাক্কা লাগতে পারে। তাই Social distance না বলে কথাটা Physical Distance বা শারীরিক দূরত্ব বলাই শ্রেয়। তাতে বরং সাধারণ মানুষ সঠিক বার্তা পাবেন। তা মেনে চলতেও তাঁদের কোনও সমস্যা হবে না। আমেরিকান নর্থ-ইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপকের এই প্রস্তাবের গুরুত্ব বুঝে তা মেনে নিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO). নতুন শব্দবন্ধটি এরকম হতে পারে – সামাজিক যোগাযোগের মধ্যেই শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা।

Advertisement

‘সামাজিক দূরত্ব’, একথা বললেই যেন অস্পৃশ্যতার ছায়া ভেসে ওঠে। জাতি-বর্ণ-ধর্মের মধ্যে ফারাকের সেই মধ্যযুগীয় ধারণা যেন উসকে দেয় এই শব্দবন্ধ। বিশেষত সামান্য অসুস্থ রোগীর থেকে ছিটকে দূরে সরে যাওয়ার প্রবণতা তাঁদের মনে একটা বিচ্ছিন্নতার বেদনাবোধ তৈরি করে। মনের কোনও নরম অংশে চিকিৎসকদের এই কড়া নির্দেশের বাস্তব দিকটা একেবারেই বোধগম্য হয় না। বরং আবেগ ধাক্কা খায় অনেক বেশি।

[আরও পড়ুন: ‘খাবার জোগাড় করাই বড় চ্যালেঞ্জ’, করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ডালাস থেকে জানালেন বাঙালি গবেষক]

আমেরিকান নর্থ-ইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড্যানিয়েল আল্ডরিখের মতে, এই ‘সামাজিক দূরত্ব’-এর অর্থ অনেকাংশে ভুল হতে পারে। মনে হতে পারে, সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে হচ্ছে। তার চেয়ে ব্যাপারটা এভাবে ভাবলে ভাল হয় যে সামাজিক যোগাযোগ রাখতে কোনও বাধা নেই, স্রেফ শারীরিকভাবে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে কয়েকটা দিন। তিনি বলছেন, “এই সংকটের সময়ে এই সামাজিক যোগাযোগ সংক্রান্ত যে কোনও শব্দই খুব স্পর্শকাতর বিষয় হয়ে উঠছে। গবেষণায় দেখছি, মানুষজনের মধ্যেকার স্বাভাবিক টান কেমন আলগা হয়ে গিয়েছে। যুদ্ধ পরিস্থিতির মতো অনেকে আচরণ করছেন। এই সময়টা যুদ্ধ পরিস্থিতির চেয়ে কিছু কম ভয়াবহ নয় ঠিকই। কিন্তু এখানে তো কোনও মানুষ একে অন্যের শত্রুপক্ষ নয়।”

[আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণে চিন, ইটালিকে হারাল আমেরিকা, লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা]

তাই সতর্কতার জন্য এমন কোনও শব্দ ব্যবহার উচিত নয় যাতে মানুষের মনের স্বাভাবিক ছন্দ কেটে যায়। আল্ডরিখের উদ্বেগ বিশেষত বয়স্কদের নিয়ে। কারণ, তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে সেভাবে যুক্ত নন। তাঁদের কাছে জনসংযোগ মানেই সরাসরি দেখা করা, কথা বলা। ফলে তাঁদের কাছে ‘সামাজিক দূরত্ব’ শব্দটাই অনেকটা ধাক্কার। বরং তাঁদের এভাবে যদি বোঝানো যায় যে দেখা-সাক্ষাৎ সবই হোক, কিন্তু শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে, তাহলে ব্যাপারটা অনেক সহজ হয়। আল্ডরিখের এই বক্তব্য যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত বলে মনে করেছেন WHO কর্তারা। তাঁরা সকলে একবাক্যে ‘সামাজিক দূরত্ব’ শব্দটিকে সরিয়ে Physical Distance কথাটি চালু করার পরামর্শ দিয়েছেন। স্বাস্থ্যকর্মীদেরও সেই মর্মে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সামাজিক দূরত্বের বদলে সকলে বলুন শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা। তবে এই সংশোধিত শব্দ বিশ্বজুড়ে কবে প্রতিষ্ঠা পাবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে অনেকেরই।

The post ‘সামাজিক দূরত্ব’ কথায় আপত্তি বিশেষজ্ঞদের একাংশের, যুক্তি মেনে শব্দটি বদলাচ্ছে WHO appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement