মলয় কুণ্ডু: লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে অর্থ পেতে এবার নিজের নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। যদি কারও নিজের নামে অ্যাকাউন্ট না থাকে, তাহলে প্রথমে দুয়ারে সরকারের শিবিরে সেই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেবে রাজ্য সরকার। কোনওভাবেই যাতে একজন উপভোক্তা একাধিকবার টাকা না পায়, তার জন্য কড়া নজর দিতে চলেছে প্রশাসন। একইসঙ্গে যে কোনও ধরনের আর্থিক সহায়তা প্রকল্পের সুবিধা নিতে গেলে উপভোক্তার আধার কার্ডের সঙ্গে তা যোগ করা হবে। নবান্ন সূত্রে খবর, সঠিক উপভোক্তা যাতে তাঁর প্রাপ্য অর্থ সাহায্য পান, সেটা কড়াভাবে দেখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু দুয়ারে সরকার। চলবে ১৫ মার্চ পর্যন্ত। একইসঙ্গে ফের শুরু করা হচ্ছে ‘পাড়ায় সমাধান’ প্রকল্পও। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে চলবে ১৫ মার্চ পর্যন্ত। দুয়ারে সরকারে রাজ্যের ২৪টি দপ্তরের তরফে একগুচ্ছ পরিষেবা মিলবে শিবির থেকে। শিবিরের প্রস্তুতি নিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যালোচনা বৈঠক মুখ্যসচিব এইচকে দ্বিবেদী। সেখানে দপ্তরের শীর্ষকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই এ বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে খবর। দুয়ারে সরকার ও পাড়ায় সমাধানের জন্য নির্দিষ্ট সময়ভিত্তিক গাইড লাইনও তৈরি করে দেওয়া হয়েছে বলে খবর।
[আরও পড়ুন: রাজ্যপালের অপসারণের দাবিতে সংসদে প্রস্তাব আনার ভাবনা তৃণমূলের, তৈরি হচ্ছে নীল নকশা]
এবারই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে ‘সিঙ্গেল অ্যাকাউন্ট’ বা নিজের নামে অ্যাকাউন্ট থাকলে তবেই মিলবে পরিষেবা। এর আগে জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট থাকলেও মহিলারা আর্থিক সাহায্য পেতেন। প্রশাসনের নজরে এসেছে, বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে সিঙ্গেল অ্যাকাউন্ট না হওয়ার ফলে ওই মহিলা বেশি টাকা সাহায্য পেয়ে যাচ্ছেন। এই সমস্যা দূর করতেই এবার লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে নিজের নামে অ্যাকাউন্ট বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। পাশাপাশি, খাদ্যসাথী, বয়স্ক পেনশন সব কিছুর সঙ্গে আধার সংযুক্তি করতে হবে। এক উপভোক্তা যেন বারবার না পায় তা দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভিড় এড়াতে বেশি শিবির করতে চায় রাজ্য। পাড়ায় সমাধানের শিবির প্রত্যেকটি গ্রাম পঞ্চায়েতে ২-৩টে করে করতে হবে। কোনও দপ্তরে পাড়ায় সমাধানের আবেদনপত্র নেওয়া হবে না। কেবলমাত্র শিবিরেই নিতে হবে। পাড়ায় সমাধানের জন্য আর্থিক বরাদ্দ করা রয়েছে। আবেদনের ভিত্তিতে যে প্রকল্পে অনুমোদন রয়েছে তার কাজ আগে শুরু করতে হবে। দপ্তরগুলিকে বলা হয়েছে, পাড়ায় সমাধানের ক্ষেত্রে যেখানে যা বাকি রয়েছে, সেই অর্থ দিতে। এক্ষেত্রে অর্থ সচিব সমন্বয় রাখবেন। পরিষেবা যাতে ঠিকঠাক পেতে পারেন, তার জন্য জেলাস্তরে এডিএমরা ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা করবেন।
[আরও পড়ুন: গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্ত ৩,৬০০, অনেকটা কমল RT-PCR টেস্টের খরচ]
এছাড়াও বাংলা সহায়তা কেন্দ্রগুলিকে আরও সক্রিয় করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে সেখান থেকে সব তথ্য মানুষ পায়। তথ্য জানার জন্য ই-ওয়ালেট চালু করতে বলা হয়েছে। বাংলা আবাস যোজনা ফেজ ২ তে এসসি, এসটি ও অন্যান্য উপভোক্তারা কীভাবে যুক্ত হচ্ছে, তার জন্য নির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করতে বলা হয়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর জন্য আলাদা করে কাউন্টারও থাকবে শিবিরে। স্টুডেন্ট ক্রেটিড কার্ড, মৎস্যজীবী ও আর্টিজেন ক্রেডিট কার্ডে বাড়তি গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।