নন্দন দত্ত, বীরভূম: চার বছর পর রায় ঘোষণা। এসআই অমিত চক্রবর্তী খুনের মামলায় প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস পেয়ে গেলেন ২১ জন অভিযুক্তই। পুলিশের ভূমিকায় রীতিমতো ক্ষুদ্ধ আদালত। সিউড়ি আদালতের প্রথম অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সোমেশচন্দ্র পালের মন্তব্য, ঘটনার সঠিক তদন্ত হয়নি। দায়সারাভাবে তদন্ত করেছে পুলিশ।অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও তথ্য-প্রমাণ পেশ করতে পারেননি তদন্তকারীরা। এদিকে রায় ঘোষণার পর আদালতে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহত পুলিশকর্মীর স্ত্রী পুতুল চক্রবর্তী। পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে গাফলতির অভিযোগ তুলেছেন তিনিও।
[ঋণের টাকা চাইতে গিয়ে খুন মহিলা, চাঞ্চল্য বাগডোগরায়]
বীরভূমের দুবরাজপুর থানার এসআই ছিলেন অমিত চক্রবর্তী। ২০১৪ সালে জুনে একশো দিনের প্রকল্পের কাজকে কেন্দ্র করে সিপিএম ও তৃণমূলের সংঘর্ষ শুরু হয় যশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের আউলিয়া গোপালপুর গ্রামে। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশবাহিনী নিয়ে গ্রামে যান এসআই অমিত চক্রবর্তী। বোমার আঘাতে জখম হন তিনি। দুবরাজপুর থানার ওই পুলিশ আধিকারিককে ভরতি করা হয় দুর্গাপুরের মিশন হাসপাতালে। ৫৫ দিন ধরে কার্যত যমে-মানুষের টানাটানি চলে। ২৮ জুলাই মারা যান এসআই অমিত চক্রবর্তী। খুনের অভিযোগে ৫০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছিল পুলিশ। ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল জেলা পরিষদের তখনকার কর্মাধ্যক্ষ-সহ শাসকদলের চারজন কর্মীর। চার্জশিটে নাম ছিল তিনজন সিপিএম কর্মীরও। গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ২১ জনকে। বিচার চলাকালীন মারা যান ২ জন অভিযুক্ত। জামিনে ছাড়া পান আরও একজন। মামলার রায় ঘোষণা হওয়া পর্যন্ত জেলে ছিলেন ১৮ জন। শুক্রবার প্রমাণের অভাবে ১৯ জন অভিযুক্তকেই বেকসুর খালাস দিল সিউড়ি আদালত। মামলার রায় ঘোষণা করতে গিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন প্রথম অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সোমেশচন্দ্র পাল।
সিউড়ি আদালতে চার বছর ধরে এসআই অমিত চক্রবর্তী খুনের মামলার শুনানি চলেছে। এই মামলাটি প্রথম থেকে ছিল নাটকীয়তায় ভরা। আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন ২০ জন। তাঁদের মধ্যে ১৮ জনই পুলিশকর্মী। সাক্ষ্য দিতে গিয়ে পুলিশ আধিকারিকরা কখনও অভিযুক্তদের চিনতে পেরেছেন, আবার কখনও পারেননি। এমনকী, একবার শুনানিতে সাক্ষীদের তালিকায় নিহত এসআই অমিত চক্রবর্তীর নামও উল্লেখ করেছিলেন তদন্তকারী অফিসার!
ছবি: বাসুদেব ঘোষ
[ ঘরে ঢুকে সমকামী ভাড়াটিয়াকে বেধড়ক মার বাড়ির মালিকের]
The post প্রমাণ নেই, এসআই অমিত চক্রবর্তী খুনে বেকসুর খালাস ১৯ জন অভিযুক্ত appeared first on Sangbad Pratidin.