ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: যে সব চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ জমে রয়েছে, সেসবের শুনানি শুরু করল রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল (West Bengal Medical Council)। শুরুতেই ছ’মাসের জন্য রেজিস্ট্রেশন বাতিল হল এক চিকিৎসকের। ৬২টি জন চিকিৎসকের ভবিষ্যৎ সুতোয় ঝুলছে। যে বেসরকারি চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন (Registration) ছ’মাসের জন্য বাতিল করা হয়েছে, তিনি বর্ধমানের বাসিন্দা। রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি বিধায়ক ডা. সুদীপ্ত রায় এই তথ্য জানিয়ে বলেছেন, ‘‘কমিশনের এথিক্যাল কমিটি কয়েক দফা শুনানির পর সব দিক খতিয়ে দেখে ছ’মাসের জন্য ওই চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করেছে।’’
কমিশন সূত্রে খবর, বধর্মানের (Burdwan) ওই চিকিৎসক প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতেন। রোগীমৃত্যুর পর পরিবারের তরফে কমিশনে অভিযোগ (Complain) জমা পড়ে। কমিশনের এথিক্যাল কমিটি বর্ধমান শহরে গিয়েই শুনানি করে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ছ’মাসের জন্য রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়। কমিশনের রেজিস্ট্রার মানস চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘নতুন মেডিক্যাল কমিশন গঠনের পর এটাই প্রথম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হল।’’ মানসবাবু জানিয়েছেন,‘‘নিয়ম অনুযায়ী কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অভিযুক্ত ৯০ দিনের মধ্যে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবের কাছে আবেদন করতে পারেন। তা প্রত্যাখ্যান হলে আদালতের দ্বারস্থ হতেই পারেন অভিযুক্ত চিকিৎসক।’’
[আরও পডুন: এবার জেলের ‘ঘানি টানা’ তেল বিকোবে খোলাবাজারে, দাম জানেন?]
ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিল সূত্রে খবর, শাস্তি ঘোষণার দিন থেকে টানা ছ’মাস রোগী দেখতে পারবেন না। কোনও পরামর্শ দিতেও পারবেন না। এমনকী এমন কোনও অভিযোগ পেলে তারও তদন্ত করার এক্তিয়ার রয়েছে কমিশনের। ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ কমিশন যেমন বিভিন্ন কমিটি নতুন করে গঠন করছে, তেমনই যেসব অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে সেগুলির দ্রুত সুরাহা করতেও কাজ শুরু করেছে। ওয়েস্টবেঙ্গল মেডিক্যাল কমিশন সূত্রে খবর, অন্তত সাত বছর ধরে কয়েকশো অভিযোগ পড়ে রয়েছে। কেন এইসব অভিযোগের সুরাহা করা হয়নি? তা নিয়ে স্পষ্ট উত্তর মেলেনি। তবে গত কয়েকমাস ধরে শুনানির কাজ শুরু হয়েছে।
[আরও পডুন: পৃথিবীর নাগাল থেকে পিছলে যাচ্ছে চাঁদ! ক্রমেই বড় হচ্ছে দিন]
আপাতত ৩১৫টি অভিযোগ কমিশনের স্ক্যানারে রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৩০জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ স্রেফ বাতিল হয়েছে। তবে প্রায় ৬২জন চিকিৎসক কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে চলেছেন। কমিশন সূত্রে খবর, সরকারি ও বেসরকারি, দুই বিভাগের চিকিৎসক রয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে কর্তব্যে অবহেলার ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। কমিশন সূত্রে খবর, মেডিক্যাল কাউন্সিলের সব তথ্য কম্পিউটারে নথিভুক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিল সূত্রে খবর, এখন থেকে শুনানির জন্য চিকিৎসক ও রোগীর পরিবারকে কলকাতায় (Kolkata) আসতে হবে না। যাবতীয় নথিপত্র কমিশনের ওয়েবসাইটে পাঠালেই হবে। দ্বিতীয়ত, কমিশনের প্রতিনিধিরা এখন থেকে জেলায় গিয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগের শুনানি করবেন।
এর ফলে চিকিৎসক ও অভিযোগকারীকে জেলা থেকে কলকাতায় আসতে হবে না। কমিশনের সভাপতি ডা. সুদীপ্ত রায় জানান, আগামী দিনে চিকিৎসক তাঁর সার্টিফিকেট, রেজিস্ট্রশন নম্বর ওয়েবসাইট থেকে পেয়ে যাবেন, এমনভাবেই সাজানো হচ্ছে কমিশন।