সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইরানের একটি শিয়া ধর্মস্থানে ভয়াবহ হামলা চালাল আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট। এই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৫ জন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০। আহতদের অনেকেরই অবস্থা আশঙ্কাজয়নক হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইরানের (Iran) সরকারি সংবাদমাধ্যম IRNA সূত্রে খবর, বুধবার রাতে দেশটির সিরাজ শহরে একটি মাজারকে নিশানা করে বন্দুকবাজরা। শিয়া সম্প্রদায়ের শাহ চেরাগ মাজারে প্রবেশ করে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে তিনজন বন্দুকবাজের একটি দল। গুলির আঘাতে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন অনেকেই। এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৫ জন। আহত বহু। তাঁদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দু’জন হামলাকারীকে পাকড়াও করেছে নিরাপত্তারক্ষীরা। এক জঙ্গি এখনও পলাতক। এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, “আমরা প্রার্থনা করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলাম তখনই গুলির শব্দ শুনতে পাই। আমি পালানোর চেষ্টা করি তখনই দেখতে পাই কয়েকজন রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছেন।”
[আরও পড়ুন: পরমাণু অস্ত্র নিয়ে মহড়া পুতিন বাহিনীর, ব্যালিস্টিক মিসাইল উৎক্ষেপণ রাশিয়ার]
শিয়া ধর্মস্থানে এই হামলার দায় স্বীকার করেছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (ISIS)। এহেন বর্বর হামলার উচিত জবাব দেওয়া হবে বলে হুঙ্কার দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। তিনি বলেন, “দেশ ভাগ করার ষড়যন্ত্রে বিফল হয়ে ইরানের শত্রুরা এবার হিংসা ছড়াচ্ছে। এই বর্বরোচিত কাজের সমোচিত জবাব দেওয়া হবে। যারা এই হামলা চলিয়েছে তাদের উচিত সাজা দেবে ইরানের নিরাপত্তা সংস্থাগুলি।”
এদিকে, শিয়া সংখ্যাগুরু দেশ ইরানে আইএস জঙ্গিদের এভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠা অশনি সংকেত বলেই মত বিশ্লেষকদের। বিশেষ করে হিজাব বিক্ষোভের সময় জঙ্গিদের গতিবিধি ভবিষ্যতে বড় অঘটনের দিকেই ইঙ্গিত করছে। তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ফওয়াদ ইজাদির মতে, মসজিদ ও মাজারগুলিকে নিশানা করা ইসলামিক স্টেটের ট্রেড মার্ক হামলার নমুনা।
উল্লেখ্য, আইএস সুন্নি জেহাদি সংগঠন। তবে ইসলামের ব্যাখ্যা ও মতবাদ নিয়ে তালিবান ও আল কায়দার মতো জেহাদি সংগঠনের সঙ্গে তাদের বিবাদ তুঙ্গে। আইএসের দাবি, তালিবান আমেরিকার ‘মোল্লা ব্র্যাডলি’ প্রকল্পের অঙ্গ। ওই মৌলবাদীদের মতে, ওই প্রকল্পে জেহাদি সংগঠনের একাংশকে নিজেদের দিকে টেনে সেগুলিকে দুর্বল করে দেয় আমেরিকা। এতদিন আফগানিস্তানে সংখ্যালঘু শিয়া সম্প্রদায়কে নিশানা করে আসছিল ইসলামিক স্টেট। এবার ধর্মের নামে ইরানেও শিয়াদের উপর হামলা করছে তারা।