সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাগুইহাটির জোড়া খুনে (Baguiati Murder) প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকা। মৃত দুই পড়ুয়ার পরিবারের সদস্যরা পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছে। ১৪ দিন ধরে বসিরহাটের মর্গে দেহ পড়ে থাকলেও তা জানতে পারেনি পুলিশ। যদিও মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দাপ্রধান বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, পরিবার অভিযোগ করে থাকলে স্থানীয় থানার ভূমিকা খতিয়ে দেখা হবে। প্রশ্ন উঠছে খুনের কারণ নিয়েও। এদিকে ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছে রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ দপ্তর।
দুই স্কুল পড়ুয়া অভিষেক নস্কর এবং অতনু দে খুনের ঘটনায় ফুঁসছে বাগুইআটির জগৎপুর এলাকার বাসিন্দারা। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরির বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে মূল অভিযুক্তর শ্বশুরবাড়ির আসবাবপত্রে। এলাকাস্থল ঘিরে রেখেছে বাগুইআটি থানার পুলিশ। কিন্তু পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তুলছেন মৃত পড়ুয়া অতনুর পরিবার।
২২ আগস্ট নিখোঁজ হওয়া দুই পড়ুয়াকে বাসন্তী হাইওয়েতে খুন করা হয়। দু’সপ্তাহ ধরে বসিরহাট থানার মর্গে পড়েছিল দেহ। অথচ জানতই না পুলিশ। এদিকে ১ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে মেসেজ করা হচ্ছিল পরিবারের সদস্যদের। এ প্রসঙ্গে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দাপ্রধান বিশ্বজিৎ ঘোষের দাবি, “আমরা ভাবিনি যে বাচ্চা দু’টি মারা যাবে। তাই মর্গে খোঁজ করিনি।” তাদের আরও দাবি, মুক্তিপণ চাওয়া হলেও খুনটা হয়েছে অন্য কোনও কারণে। তবে অপহরণের পর থেকে কোন পথে ঘটনাক্রম এগিয়েছে তার বর্ণনা দেয়নি পুলিশ। এদিকে মৃত ছাত্র অভিষেক নস্করের মা কমলা নস্কর সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেছে, বাগুইআটি থানা কিছু করেনি। ওদের বলেছিলাম বাচ্চাগুলো খুঁজে আনতে। ওরা বলেছিল করছি। কিন্তু কিচ্ছু করেনি ওরা।
এদিকে দুই মাধ্যমিক পড়ুয়ার খুনের ঘটনায় তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা। এ প্রসঙ্গে বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “দুটি মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে অপহরণ করে খুন করা হল। কলকাতার বুকে এমন পৈশাচিক ঘটনা আগে ঘটেনি। দেহ ১৪ দিন মর্গে পড়ে রইল অথচ পুলিশ কিছু জানতে পারল না। মুখ্যমন্ত্রীর কোনও বিবৃতি নেই এরপরেও। এই সরকার ক্ষমতায় থাকার অধিকার হারিয়েছে।” অন্যদিকে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী শশী পাঁজা। তিনি জানান, পুলিশ তদন্ত করছে। কীভাবে কী হল ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে জানা যাবে। জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলে রিপোর্ট চেয়েছি।” ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন সমাজকর্মী সুদেষ্ণা রায়।