সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় মূল স্রোতের কোনও ছাত্র সংগঠনকে নয়, বাংলা পক্ষকে দায়ী করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর বক্তব্য, বাংলা পক্ষের মতো সংগঠনের উসকানিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে গেল। বৃহস্পতিবার যাদবপুর এইট বি-র কাছে বিজেপি যুব মোর্চার প্রতিবাদ সভা ছিল। সেখানে বক্তব্য রাখতে যান শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। সেখান থেকে তিনি এই ঘটনার জন্য পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি বাংলা পক্ষকে দায়ী করেন। তার পালটা জবাবও দিয়েছেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা গর্গ চট্টোপাধ্যায়। বিরোধী দলনেতার এহেন দাবি নিয়ে তিনি স্পষ্ট কটাক্ষের সুরে বলেন, ”টিভিতে দেখেছি ওঁকে, চিনি না।”
এক সপ্তাহ আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। হস্টেলের তিনতলা থেকে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন নদিয়ার বগুলার ছেলে। এর নেপথ্যে র্যাগিংকে (Ragging) দায়ী করা হচ্ছে। তা নিয়ে এই মুহূর্তে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। একে অপরের বিরুদ্ধে দোষারোপ শুরু করেছে যথারীতি। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নিশানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের ক্ষমতায় থাকা এসএফআই ও অন্যান্য বাম, অতি-বাম সংগঠন। এই দায়, পালটা দায় নিয়ে বাকযুদ্ধের মাঝে শুভেন্দু অধিকারী সম্পূর্ণ অন্য কথা শোনালেন। বাংলা ভাষা নিয়ে কাজ করা সংগঠনকে দায়ী করলেন এর জন্য। ঘটনায় ধৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরী এই সংগঠনের সদস্য বলে দাবি তাঁর। তৃণমূলের ‘বি টিম’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এদিনের সভায় বিরোধী দলনেতা ঘোষণা করেন, দলের ১৫ জন বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে তিনি যাবেন নদিয়ায়, মৃত ছাত্রের বাড়িতে। বাবার অনুমতি পেলে তদন্তভার নিজেদের কাঁধে তুলে নেবেন।
[আরও পড়ুন: যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যু: সুরক্ষায় একাধিক নয়া পদক্ষেপ বিশ্ববিদ্যালয়ের, তথ্যানুসন্ধান দল গড়ল রাজ্য]
এর জবাবও দিয়েছেন বাংলা পক্ষের (Bangla Pokkho) সাধারণ সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ্যায়। কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, ”একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে বাংলা পক্ষের কোনও সংগঠনই নেই। উনি হঠাৎ করে জুড়ে দিলেন আমাদের নাম! আমি তো বলব ওঁকে প্রমাণ দেখাতে যে আমরা কোথায় কীভাবে এর মধ্যে যুক্ত থাকতে পারি। এবার থেকে বাংলা পক্ষও রাজ্যের সব কটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংগঠন ছাত্র পক্ষ খুলবে। তারপর দেখা যাবে।” তাঁর আরও দাবি, “বাংলা পক্ষ বিজেপির আসল রূপ বাঙালির সামনে তুলে ধরছে বলেই ওদের এত সমস্যা। WBCS এ বাংলা ভাষা বাধ্যতামূলক করার বিরোধিতা করায় রাজ্য জুড়ে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ব্যানার লাগায় বাংলা পক্ষ। যাদবপুরে বাংলা পক্ষর আন্দোলনে ৯০% ভূমিপুত্র সংরক্ষণ চালু হওয়ায়, বহিরাগতদের দিয়ে ABVP-র জমি তৈরির চেষ্টাও ব্যর্থ হয়। এই সবের সম্মিলিত রাগেই বাংলা পক্ষর নামে এই ধরনের ভিত্তিহীন অপপ্রচার। তাঁকে ধিক্কার জানাই।”
[আরও পড়ুন: দিলীপকে দিল্লিতে জরুরি তলব শাহর, এবার কি মানভঞ্জনের পালা?]
এদিকে, ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় কর্তৃপক্ষের ভূমিকায় অত্যন্ত অসন্তোষ প্রকাশ করেছে রাজ্যের শিশু সুরক্ষা কমিশন। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দেওয়া রিপোর্ট ‘অসন্তোষজনক’ বলে মনে করছেন কমিশনের সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, দায় ঝেড়ে ফেলেছে কর্তৃপক্ষ। দোষীদের আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে।