সুকুমার সরকার, ঢাকা: কথা দিয়েছিলেন, পুজোর আগে এপারে পাঠাবেন পদ্মার ইলিশ (Hilsa)। লকডাউনের খরা কাটিয়ে বাংলাদেশের তরফে চলতি সপ্তাহেই রুপোলি শস্য এসে পৌঁছেছে ভারত-বাংলাদেশ (India-Bangladesh Border) সীমান্তগুলিতে। সেখান থেকে সোজা বাজারে বাঙালির প্রিয় ইলিশ। এবং ভাল দামে তা অতি দ্রুত বিক্রি হয়ে গিয়েছে। অনেকদিন পর পদ্মার ইলিশ দিয়ে অপূর্ণ স্বাদ পূরণ করেছেন ভোজনরসিক বাঙালি। কিন্তু এমন সময়ে ভারত পিঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিল! বাংলাদেশে চরম সংকট পিঁয়াজের। এই অবস্থায় দিল্লির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কার্যত ক্ষোভে ফুঁসছে ঢাকা।
সম্প্রতি কেন্দ্র পিঁয়াজ রপ্তানিতে (Onion Export) নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বলা হয়েছে, দেশের উত্তর-পূর্ব এবং পূর্ব প্রান্তে পিঁয়াজ সংকট দেখা দেওয়ায় এই সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে। ফলে বাংলাদেশেও আর পিঁয়াজ পাঠানো হবে না। চলতি সপ্তাহে এখান থেকে পিঁয়াজ পৌঁছয়নি ওপারে। ফলে বুধবার, রান্নাপুজোর দিন বাজার থেকে একটুকরো পিঁয়াজ সংগ্রহ করতে নাভিশ্বাস উঠেছে আমজনতার। এর জেরেই ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। বাংলাদেশের একটি সরকারি সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, আলোচনা ছাড়া ভারতের একতরফাভাবে এই সিদ্ধান্ত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্কের অলিখিত চুক্তিভঙ্গ। বুধবার এ নিয়ে দিল্লিতে একটি চিঠিও পাঠিয়েছে ঢাকা।
[আরও পড়ুন: পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়ানোর চেষ্টা, ঢাকায় শুরু বিএসএফ ও বিজিবির সীমান্ত সম্মেলন]
ইলিশ এবং পিঁয়াজের পারস্পরিক রপ্তানি নিয়ে মাঝে ঢাকা-দিল্লির (Bangladesh News in Bengali) মধ্যে খানিক জটিলতা তৈরি হয়েছিল। তবে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দু’দেশের বাণিজ্য নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে স্থির হয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী হিসেবে যতটা সম্ভব পিঁয়াজ বাংলাদেশকে দেবে ভারত। সেইমতোই কম পরিমাণে হলেও রপ্তানি চলছিল। বাংলাদেশে এমনিতেই পিঁয়াজের চড়া দাম। ফলে রপ্তানি না হলে, বাজারে চাহিদার তুলনায় যোগান অনেক কমবে। আমজনতার পক্ষে তা কেনা সম্ভব নয় একেবারেই। সে কথা মাথায় রেখেই বন্ধুদেশের প্রতি সহমর্মী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ভারতের তরফে। তবে চলতি সপ্তাহে ফের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত বন্ধ হয়ে গেল পিঁয়াজ রপ্তানি।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ‘গোষ্ঠী সংক্রমণ’, করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ WHO’র]
অন্যদিকে, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, পুজোর আগে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করেছে হাসিনা সরকার। গত তিনদিনে ভারতে ১৯৭ .৯ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ এসেছে পদ্মাপাড় থেকে। বন্দর সূত্র জানায়, দুর্গাপুজো উপলক্ষে প্রতিশ্রুত ১৪৭৫ মেট্রিক টন ইলিশের মধ্যে গত তিনদিনেই ১৯৭.৯ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ রপ্তানি হয়েছে ভারতে। বুধবার ৯৩.৬ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে পৌঁছয়। এর আগে সোমবার ৪১.৩ মেট্রিক টন ও মঙ্গলবার ৬৩ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি হয়। প্রতি কেজি ইলিশের দর ৮০০ টাকা। এই দরে রপ্তানি করা প্রতিটি ইলিশের ওজন ছিল এক কেজি থেকে ১২০০ গ্রাম।
The post কথা রেখে হাসিনা ইলিশ পাঠালেও পিঁয়াজ রপ্তানি করছে না ভারত, আক্ষেপ বাংলাদেশের appeared first on Sangbad Pratidin.