সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছাত্রনেতা ওসমান হাদির মৃত্যুর পর থেকে নৈরাজ্যের বাংলাদেশের (Bangladesh Unrest) সাক্ষী গোটা পৃথিবী। এবার হামলা হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী মধুর ক্যান্টিনে। মৌলবাদী জামাত এবং তার দোসররা বেছে বেছে হামলা চালাচ্ছে প্রগতিশীল, সম্প্রীতির ঠিকানায়। সেই কারণেই এর আগে দুই সংবাদমাধ্যম এবং ছায়ানটের মতো সংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার আক্রান্ত মধুর ক্যান্টিন। হামলার ভিডিও সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। নিন্দায় সরব হয়েছে বাংলাদেশেরই মুক্তমনারা।
বুধবার বিকেলে এক যুবক ক্যান্টিনে প্রবেশ করে টেবিল-চেয়ার ভাঙচুর করেন। কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা আবৃত্তি করতে করতে অস্বাভাবিক আচরণ করতে দেখা যায় তাঁকে। এইসঙ্গে মাঝেই মাঝেই 'আল্লা হু আকবর' রব তোলেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সবুজ পাঞ্জাবি পরা যুবক প্রথমে ক্যান্টিনের সামনে পোস্টারে লাথি মারেন। তাতে নিজেই উলটে পড়ে যান। এরপর পোস্টার ছেড়ার চেষ্টা করেন তিনি। ভেতরে ঢুকে আসবাবপত্রে হামলা চালান। ওই সময় যুবকের আচরণে ভয় পেয়ে অনেকে ছুটে পালান। এই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। যা দেখে নিন্দায় সরব হয়েছে বাংলাদেশের মুক্তমনা নাগরিকরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মীরা ওই ব্যক্তিকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
প্রসঙ্গত, ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মধুসূদন দে মধুর ক্যান্টিন শুরু করেন। এই ক্যান্টিনটি পরবর্তীতে ভাষা আন্দোলন এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত হয়। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে অপারেশন সার্চলাইটের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী মধুসূদন দে-কে হত্যা করে। সেই থেকে, ক্যান্টিনটি বাংলাদেশের আন্দোলন, জাতীয় ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের প্রতীক হয়ে রয়েছে। এমন জায়গায় মৌলবাদীদের হামলা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বলেই মনে করছে বিশ্লেষকরা। মুক্তযুদ্ধ বিরোধী, ধর্মের ঊর্ধ্বে বাঙালি ঐতিহ্যকে আক্রমণ করতেই মধুর ক্যান্টিনে হামলা হয়েছে।
