সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত জুলাই মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল পদ্মাপাড়ের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোতে। ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ৩৩০ দিনে সংখ্যালঘুদের উপর ২, ৪৪২টি সহিংসতার ঘটনার কথা জানায় 'বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ'। এবার মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা 'রাইট অ্যান্ড রিস্ক অ্যানালিসিস গ্রুপ' বাংলাদেশে লাগাতার সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে প্রতিবাদ পত্র প্রকাশ করল। সেখানে বলা হয়েছে, আনসারুল্লা বাংলা টিমের মতো কট্টরপন্থী ইসলামি সংগঠনগুলি তো বটেই, এমনকী সংখ্যালুঘদের নির্যাতনে সেনাবাহিনী এবং দেশের বিচার বিভাগকেও ব্যবহার করা হচ্ছে।
'রাইট অ্যান্ড রিস্ক অ্যানালিসিস গ্রুপ' তাদের রিপোর্টে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক 'অরাজক' পরিস্থিতি তুলে ধরেছে। যেমন, গত ২৩ অক্টোবর একাধিক ইসলামপন্থী গোষ্ঠী বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ ও শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ দেখায়। সেখানে তারা অবিলম্বে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে। ইসকন সদস্যদের 'ভারতীয় গুপ্তচর' বলে অভিযোগ করা হয়। হেফাজত ইসলামের তরফে সংখ্যলঘু নির্যাতনের উসকানি দিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়। দেশের সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়।
পদ্মাপাড়ে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা নতুন না। কিন্তু এবারে অভিযুক্ত সেনাও। গত ২৪ অক্টোবর সেনাবাহিনী খাগড়াছড়ি জেলায় বর্মাচরিতে অবস্থিত আর্য্য কীর্তি বৌদ্ধ বিহারের জমি জোর করে দখল করে বলে অভিযোগ। ওই এলাকায় অস্থায়ী সেনা শিবির বানানোর চেষ্টা হয়। পরবর্তী অভিযোগ আরও ভয়ংকর। ঘটনাটি ২৮ অক্টোবরের। একই জেলার গুইমারা এলাকায় এক কিশোরী গণধর্ষিতা হন। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখানো তিন যুবককে সেনাবাহিনী গুলি করে হত্যা করে! গত ৫ মে উপজাতি এলাকায় বান্দরবানের থানচিতে খিয়াং জনগোষ্ঠীর মহিলাকে গণধর্ষণ করে হত্যার অভিযোগও রয়েছে। এছাড়াও জুলাই মাসে খাগড়াছড়ির ভাইবোনছড়ায় এক স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ।
এদিকে শেখ হাসিনার আমলের আসামিরা ইউনুসের শাসনে ক্রমশ সক্রিয় হয়ে উঠছে। জঙ্গিগোষ্ঠী আনসারুল্লাহ বাংলা টিম (এবিটি)-এর প্রাক্তন নেতা বল্গার রাজীর হায়দার হত্যায় দণ্ডিত অপরাধী জসিমউদ্দন রহমানিকে সাম্প্রতিক সংখ্যালঘু বিরোধী বিক্ষোভে দেখা গিয়েছে। সব মিলিয়ে মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের আমলে সংখ্যলঘু পীড়ন বাড়ছে! সবচেয়ে বড় কথা, ইউনুসের শাসনে সরকারি মদতে সংখ্যলঘু নির্যাতন চলছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে 'রাইট অ্যান্ড রিস্ক অ্যানালিসিস গ্রুপ' -এর রিপোর্টে।
