সুকুমার সরকার, ঢাকা: মন্দিরে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুরের পর এবার বাংলাদেশে (Bangladesh) আক্রমণ ঘটল বাউল আখড়ার উপর। বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলের জেলা চুয়াডাঙা সদরের বেলগাছি গ্রামে একটি বাউল আখড়ায় (Baul Akhra)হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করল দুষ্কতীরা। আখড়াটি ফকির লালন শাহের অনুসারী মুনতাজ শাহের মাজার ও দরগা শরিফ নামে পরিচিত। রাজধানী ঢাকা সাড়ে তিনশো কিলোমিটার দূরের জেলা ও নদিয়া সীমান্ত সংলগ্ন চুয়াডাঙায় তিন বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এ আখড়ায় হামলা চলে মঙ্গলবার রাতে।
এই হামলার (Attack) পর ওই আখড়া থেকে অনেক বাউল প্রাণভয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। হামলার ঘটনায় বুধবার সকালে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হলেও বিকেল পর্যন্ত কাউকে আটকের খবর পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগের বিষয়টি চুয়াডাঙা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (OC) মাহাবুর রহমান নিশ্চিত করেছেন। আখড়াবাড়ির খাদেম আজিজুর রহমান লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে বলা হয়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার পর একদল দুষ্কৃতী ধারালো অস্ত্র-সহ বাউলদের গালিগালাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা আখড়ার ঘরের টিনের বেড়া কেটে দেয়, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। আখড়ার আঙিনার ফুল-ফলের গাছ কেটে ফেলে ও মাজারের তাঁবু আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
[আরও পড়ুন: এক হাতে থ্রি ডি ক্যামেরা, ক্যানসার অস্ত্রোপচারে শহরে হাজির অত্যাধুনিক রোবট]
এই সময় আখড়ায় রক্ষিত দানবাক্স ভেঙে অন্তত ৫০ হাজার টাকা লুট (Loot) করা হয়। বুধবার জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। চুয়াডাঙা জেলা শহর থেকে ২ কিলোমিটার দূরে মুসলিমপাড়া মাঠে এই আখড়াবাড়ির অবস্থান। মাজারটিতে প্রতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি বাউল অনুসারীদের নিয়ে বাউল গানের আসরসহ সাধু-ফকিরদের মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়।
[আরও পড়ুন: নাবালিকাকে দিঘায় নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ, আদালতে আত্মসমর্পণ তৃণমূল ছাত্রনেতার]
আখড়াবাড়ির সভাপতি শাহ আবদুর হামলাকারীদের নাম বলতে পারেননি। তিনি জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীদের কাউকে চেনা গিয়েছে, কাউকে চেনা যায়নি। তবে হামলাটি পূর্বপরিকল্পিত হতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ”বাউলদের সমাজ থেকে উচ্ছেদ করতেই এ ধরনের অপতৎপরতা।” চুয়াডাঙা জেলা বাউল কল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মুসলিম উদ্দিন জানান, ”বাউলদের উপর এই হামলা নতুন কিছু নয়। এই জেলায় একাধিকবার এ ধরনের কাণ্ড ঘটেছে। বিচার না হওয়ায় এসব ঘটনা থামছে না।” ওসি মাহাবুর রহমান বলেন, ”হামলার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে পুলিশ কাজ করছে। তদন্ত চলছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান জানান, পুলিশ পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।