সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে আসন্ন বইমেলায় জঙ্গি হামলার (Terror Threat) আশঙ্কা। সতর্ক করল পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম রবিবার ‘অমর একুশে’ বইমেলার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন রমনা প্রাঙ্গণ পরিদর্শন করে এই আশঙ্কা প্রকাশ করেন। ফলে এখন থেকেই নিরাপত্তা আঁটসাঁট করা হয়েছে।
প্রতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকায় (Dhaka) বইমেলা শুরু হলেও করোনা (Coronavirus) পরিস্থিতির কারণে এবার ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে মেলা শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)ভারচুয়ালি বইমেলার উদ্বোধন করবেন। এবারের বইমেলায় ৪৬১টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, লেখক-ব্লগার অভিজিত রায় হত্যা মামলা রায়ের পর কয়েকজন জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাই জঙ্গিরা ক্ষিপ্ত। সেনাবাহিনীর বহিষ্কৃত মেজর জিয়া পলাতক রয়েছে। তাই জঙ্গি হামলার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
[আরও পড়ুন: নিয়তির নির্মম পরিহাস, স্বামীর মৃত্যুশোক সামলে ওঠার আগেই ৫ সন্তানের শ্রাদ্ধের কাজ করলেন মা]
ডিএমপি কমিশনারের কথায়, ”অমর একুশে বইমেলা বাঙালির একটি প্রাণের মেলা। আমরা পয়লা বৈশাখ যেভাবে উদযাপন করি বই মেলাও সেভাবেই উদযাপন করি। আর বইমেলায় নিরাপত্তা দেওয়া ডিএমপি একটি বৃহৎ একটি কর্মকাণ্ডে পরিণত হয়েছে।” মেলায় জঙ্গি হামলার আশঙ্কা আছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি প্রধান বলেন, ”অভিজিৎ হত্যা মামলার রায়ে জঙ্গিরা ক্ষিপ্ত হওয়া স্বাভাবিক বলে আমরা মনে করছি। আমাদের যে আলোচনা হয়েছে সেখানেও চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তাদের মূল নেতা মেজর জিয়া সে এখানও বাইরে আছে। তবে এই ঝুঁকিকে একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছি না। এই বিষয়টি মাথায় রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: দুই স্বামীর সঙ্গে চুটিয়ে সংসার! মহিলার কীর্তি ফাঁস হতেই তীব্র চাঞ্চল্য]
তিনি আরও জানিয়েছেন, ”জরুরি মুহূর্তের জন্য মোবাইল ভ্যান, ফায়ার সার্ভিসের লোক থাকবে। আগুন-সহ যে কোনও মুহূর্তে কাজ করবে। এছাড়া জঙ্গিরা বিস্ফোরণ ঘটনানোর মতো ক্ষমতা তাদের নেই। সম্প্রতি তাকে গ্রেপ্তারে দেশের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রও বড় অঙ্কের পুরস্কার ঘোষণা করেছে। আমরাও চেষ্টা করছি তাকে ধরার জন্য।” মেলার মূল প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া দোয়েল চত্বর, শহীদ মিনার কেন্দ্রিক ও শাহবাগ, টিএসসি কেন্দ্রিক একটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। বাংলা অ্য়াকাডেমি প্রাঙ্গণে দুটি গেট, সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে ৪ টি প্রবেশ ও ৪ টি বের হওয়ার গেট থাকবে। প্রতিটি প্রবেশের রাস্তায় মেটাল ডিটেক্টর থাকবে, সার্চিং করা হবে।
করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বইমেলায় প্রবেশ করতে পারবেন দর্শকরা। মাস্ক ছাড়া মেলায় ‘নো এন্ট্রি’। গেটে শরীরের তাপমাত্রা মাপা হবে। মেলার ভেতরে মোবাইল টিম থাকবে। আর স্টলের প্রত্যেকে কোভিড টিকা দেওয়ার সার্টিফিকেট দেখাতে হবে। না জলে জরিমানা করা হবে ও তারা মেলায় স্টল কাজ করতে দেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, লিটল ম্যাগাজিন চত্বরে হঠাৎ করে কিছু আপত্তিকর বই চলে আসে। তা নিয়ে হইচই শুরু হয়ে যায়। আসলে বাংলা অ্যাকাডেমিতে প্রতিদিন যে শত শত বই প্রকাশিত হয়, সে বই মনিটরিং করা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। রাতের আঁধারে যদি কেউ বই এনে রাখেন, তাহলে সে দায় স্টল মালিক ও প্রকাশককে নিতে হবে। তা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন