নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা: ভোটের আগে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ইতিহাস শরণে বাংলাদেশের একদা প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। ১৯৭১ সালকে ভুলে যাওয়ার কোনও অবকাশ নেই বলে মনে করিয়ে দিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির। তাঁর কথায়, ''ওটাই হচ্ছে আমাদের জন্মের ঠিকানা। এই ভূখণ্ড সেদিন একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে মর্যাদা পেয়েছিল। এটা আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে। ১৯৭১ আমাদের অস্তিত্ব, পরিচয় ও স্বাতন্ত্র্যের বছর।'' শনিবার ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশবাসীর কাছে চিরকালীন দুঃসহ স্মৃতি, আবেগের বিষয়। হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশে সেই ইতিহাস মুছে দিতে বড়সড় 'চক্রান্ত' চলছে, এই অভিযোগে কাঠগড়ায় বর্তমানের অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী বছর সে দেশে সাধারণ নির্বাচন। স্থায়ী সরকার গড়তে ভোট দেবেন আমজনতা। এমতাবস্থায় আওয়ামি লিগের বিরোধিতায় পিছু হটেনি খালেদা জিয়ার বিএনপিও। পাশাপাশি অবশ্য তারা জামাতেরও তীব্র বিরোধিতা করেছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম জামাত-ই-ইসলামির নাম না করে শনিবার বলেন, ''একটা শক্তি আছে, যারা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছিল। তারা এখন সেই ইতিহাসকে নিচে নামিয়ে দিতে চায়। তারা শুধু ২৪ জুলাইয়ের আন্দোলনকে বড় করে দেখাতে চায়। কিন্তু আমরা একদিনের জন্য নয়, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও ফ্যাসিস্ট শক্তিকে পরাজিত করতে শেখ হাসিনাকে উৎখাতের জন্য ১৫ বছর ধরে সংগ্রাম করছি। আমাদের ৬০ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে ৬ বছর কারাগারে থাকতে হয়েছে। আমাদের সিনিয়র নেতাদের শত শত মামলা, ১৭০০ নেতা-কর্মী গুম, ২ হাজার মানুষ খুন হয়েছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র কায়েম করা হয়েছে। আমরা সেটার বিরুদ্ধে আজও লড়াই করছি।''
তাঁর আরও অভিযোগ, ''কিছু শক্তি পরিকল্পিতভাবে বিভক্তি আনতে চায়। তারা ১৯৭১ সালকে ভুলিয়ে দিতে চায়, কারণ তারা চায় জাতির মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে অস্বীকার করতে। ১৯৭১ সালে যারা আমাদের হত্যা করছিল, তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেশের মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের পট পরিবর্তনের পর শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রের সংস্কার শুরু করেন, একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় শাসনব্যবস্থা চালু করেন। শেখ মুজিবের পাঁচ বছরের দুঃশাসনের পরে জিয়া আমাদের নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন।''
বিএনপি মহাসচিবের প্রস্তাব, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হতে হবে। গণভোটে তাঁরা রাজি। নির্বাচনের দিনই গণভোট করা হোক। আলাদাভাবে গণভোট করলে হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ হবে। তাই নির্বাচনে দুটি ব্যালট থাকুক-একটিতে গণভোট, আরেকটিতে সংসদ নির্বাচন।
